Search

Showing posts with label প্রথম আলো. Show all posts
Showing posts with label প্রথম আলো. Show all posts

Monday, January 25, 2016

‘এক গেলাসের ইয়ার’!

এই সরকারের অর্জন বলে কিছু নেই এটা বলাটা অতিশয়োক্তি হয়ে যায়! কিন্তু এরা মাঝে-মাঝে এমন কিছু কর্মকান্ড করে বসবে যার কারণে অর্জনের কফিনে পেরেক ঠোকাই সার। পুলিশ ব্যাংক কর্মকর্তা রাব্বীকে পিটিয়ে মাদকব্যবসায়ি বলে ক্রসফায়ারের আতংকেও রেখেছিল। নাটের গুরু পুলিশ কর্মকর্তা এস আই মাসুদ শিকদারকে প্রচলিত আইনে শাস্তি দিলেই হয় তা না ঘটা করে আবার আইজিপি সাহেব বক্তব্যও রাখেন,‘রাব্বী ফৌজদারি অপরাধ করেছেন’। এই সমস্ত কর্মকান্ড দেখার কেউ নেই!
এক পা লিমনের বিরুদ্ধে আমরা গোটা রাষ্টযন্ত্রের কামান তাক করে থাকতে দেখেছি অথচ এর কোনও প্রয়োজন ছিল না আদৌ! ভুলের খেসারত দিলেই হতো…। বা হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে সন্তান-স্বামীর সামনে ফের যৌন নির্যাতন করা হয় যে গৃহবধুটিকে,তাঁর চোখ চোখ রাখার ধৃষ্টতা কার আছে এই দেশে?
এটা সবাই বিলক্ষণ জানে আইনের শাসনের বালাই নেই। ২৮ বছর চলে গেছে চট্টগ্রাম গণহত্যার এখনও বিচার হয়নি, ভাবা যায়? এখন এই বিচার হলেই কি না-হলেই কী!

হালে যে ঘটনাটা ঘটে গেল এমনধারা ঘটনায় ভেসে যায় পদ্মা সেতু! আসাদগেট নিউ কলোনির বাসিন্দাদের ঘরের ভেতর রেখেই ভবনগুলো ভাঙ্গা শুরু হয়। একেক করে ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়। কোনও গণতান্ত্রিক দেশে এমন অসভ্য কান্ড ঘটতে পারে এটা আমার কল্পনাতেও আসে না। আমি চোখ বন্ধ করে কেবল খানিকটা ভাবার চেষ্টা করতেই গা হিম হয়ে আসে। কারও বাচ্চা স্কুলে গেছে, পরিবারের কর্তা যথারীতি চলে গেছেন অফিসে বয়স্করা রয়ে গেছেন বাসায়; এমতাবস্থায় তাঁরা দেখলেন তাঁদের বসতবাড়ি গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে! শপথ আমার লেখালেখির, সমস্ত ভাবনা গুলিয়ে আমার মস্তিষ্ক স্রেফ জমে যায়। গুছিয়ে লেখার অভ্যস্ত হাত খেই হারিয়ে ফেলে…।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো বুধবার, ২০ জানুয়ারি ২০১৬
দৈনিক প্রথম আলো অসাধারণ একটা প্রতিবেদন ছাপিয়েছে, ‘ভেতরে মানুষ, বাইরে হাতুড়ির ঘা’ (বুধবার, ২০ জানুয়ারি ২০১৬)। এই প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে: ”বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ভবন ভাঙ্গা হয়েছে…বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, নিউ কলেনি সোসাইটি ভবন ভাঙ্গার বিষয়ে আদালতের স্থগিতাদেশ আছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এ বিষয়ে ১৮ জানুয়ারি শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সেই শুনানি পিছিয়ে ২১ জানুয়ারি ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ অমান্য করে ভেঙ্গেছে…।“

“বাসিন্দারা অভিযোগ করেন”, “বাসিন্দারা অভিযোগ করেন”, “বাসিন্দারা অভিযোগ করেন”, বেশ-বেশ, বাসিন্দাদের অভিযোগ থেকে আমরা জানলাম ভবন ভাঙ্গার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা ছিল। যে-কোনও অভিযোগ যে-কেউ করতেই পারেন কিন্তু পাঠকের এটা জানার উপায় নেই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে। এটা সত্য, কোনও সংবাদমাধ্যম কোনও প্রতিবেদনে নিজের মত প্রকাশ করতে পারে না কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটির কারণে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কাগজ এখানে স্ক্যান করে দিয়ে দেওয়াটাই সমীচীন ছিল।
স্পষ্টত এটা আদালত অবমাননা। এবম্প্রকার এহেন আদালত অবমাননা শাস্তিযোগ্য অপরাধ কি না সেটা আদালতের বিবেচ্য বিষয়।

অবশ্য এই সমস্ত পত্রিকার সংবাদের গুরুত্ব বোঝার আদৌ ক্ষমতা আছে কি না এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্নও বটে। এবং এটা বোঝার জন্য নাসায় সিভি পাঠাবার প্রয়োজন পড়ে না। দৈনিক প্রথম আলো এই দিন এই সংবাদটি ছাপিয়েছে ভেতরে ৯ পৃষ্ঠায় এবং এই দিনই প্রথম পৃষ্ঠায় ঢাউস ছবি দিয়ে ছাপিয়েছে ‘হলুদ বাটো মেন্দি বাটো’।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো বুধবার, ২০ জানুয়ারি ২০১৬
এটা হচ্ছে এদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন! এই হচ্ছে দেশের অগ্রসর একটা দৈনিকের নমুনা যারা ঘটা করে আমাদের শপথ করায়, দেশের আপামর জনতাকে বদলে দেওয়ার জন্য ‘গুছলেংটি’ খুলে -মুক্তকচ্ছ-কাছা খুলে নগ্ন হয়ে পড়ে। পত্রিকাটির ভেতরের ১৬ পৃষ্ঠার 'বিনোদন পাতায়' এটা ছাপালে এই পত্রিকার সর্দারদের কী পাঠক আহাম্মক বলত?
অথচ এদিনই ‘অধুনা’ নামে বাড়তি চার পাতায় মাহিয়া মাহির সুন্দর জীবন থেকে শুরু করে হাবিজাবি জিনিষে ঠাসা। ওখানে আমরা জানতে পারছি মাহিয়া মাহির প্রিয় খাবার ‘গরুর কালা ভুনা’। মাহিয়া মাহি গরুর কালা ভুনা, না কালা গরুর ভুনা খাবে নাকি তিমি মাছের ঝোল বা বাঘের দুধের পায়েস সেটা মতি ভাই বিশদ আকারে ছাপাবেন তাতে তো কোনও সমস্যা নেই। এখানেও কী ছাপাবার জায়গার আকাল হলো?

পত্রিকা চালনেো কম হ্যাপা না, খরচের বিষয়টা যে একেবারে বোধের বাইরে এমনও না কিন্তু তাই বলে...বাপু রে, আপনারা সবাই ‘এক গেলাসের ইয়ার’ সে নাহয় বুঝলুম তা শরীরে না সইলে এক পাত্র কম খেলে হয় না?

Friday, June 26, 2015

নিতান্তই গৃহপালিত...!

একজন ‘কায়কাউসের ছেলে’ নামে একটা জিনিস প্রসব করেছিল। কে পুরীষ প্রসব করবে কে করীষ এটা যার যার অভিরূচি! এই নিয়ে আমার আগ্রহ ছিল না কিন্তু তবুও তখন লিখেছিলাম [১], কেন?
কেবল একটা উদাহরণ এখানে দেই- অহেতুক রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যে ভঙ্গিতে লেখা হয়েছে এই লেখার পেছনের মানুষটাকে আমার মনে হয়েছিল ইতরবিশেষ! আর এই ইতরকে প্রথম আলো ‘জীবনানন্দ দাশ পুরস্কার’-এর নামে যেভাবে জন্তু থেকে মানুষের ভুবনে নিয়ে এসেছিল এটাকে আমার কাছে মনে হয়েছিল স্রেফ ইতরামি।
আচ্ছা, এই ইতর যেভাবে রবীন্দ্রনাথের নাম ব্যবহার করেছে সেই নামের স্থলে প্রথম আলোর সর্দারদের কারও নাম বসিয়ে দিলে কেমন হয়?

আসলে প্রথম আলোর যে শ্লোগান “...চোখ খুলে দেয় প্রথম আলো”, আমার ধারণা ছিল প্রথম আলো এটা রূপক অর্থে ব্যবহার করে। ওরে, আমি কী জানি ছাই এটা বলে সত্যি-সত্যি আমাদের চোখ খুলে ফেলার কথা বলা হচ্ছে। চোখ উপড়ে ফেলে আমরা অন্ধ- তখন প্রথম আলো আমাদেরকে হাতে ধরে ধরে শেখাবে এটা, এটা একটা ‘করীষের ছেলে’!

ওরে কত রঙ্গ রে! এরপর আমরা প্রথম আলোর বিজ্ঞপ্তি থেকে জানলাম, “সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা প্রথমা প্রকাশন ঘোষিত এ বছরের ‘জীবনানন্দ দাশ পুরস্কার ১৪২১’ বাতিল করা হয়েছে। ... পুরস্কারের শর্ত ছিল, পাণ্ডুলিপিটি প্রথমা থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবে।... বই প্রকাশের আগেই পাণ্ডুলিপিটির উল্লেখযোগ্য অংশ প্রকাশিত হয়ে যাওয়ায় এ পুরস্কার বাতিল করা হয়েছে বলে প্রথমা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। শিগগিরই ‘জীবনানন্দ দাশ পুরস্কার ১৪২২’-এর জন্য নতুন করে পাণ্ডুলিপি আহ্বান করা হবে।...”।
(প্রথম আলো ১৬ জুন ২০১৫)

শর্ত ছিল? কী আজব শর্ত রে, বাবা! আমার তো ক্যামেরুনের বাফুট প্রদেশের রাজাটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। এই রাজার ১০০ বউ ৫০০ বাচ্চা! মজার ব্যাপার হচ্ছে রাজা হওয়ার আগে তার ছিল মাত্র ২ বউ। ওই দেশের নিয়ম হচ্ছে রাজা হতে হলে আগের রাজার সবগুলো বউ-বাচ্চাকে নিজের বউ-বাচ্চা বলে স্বীকার করে নিতে হয়।
শর্ত বলে কথা!
তো, কী আর করা দ্য কাউ- গৃহপালিত সাহিত্যিকগণ কলম দিয়ে যখন পশ্চাদদেশই চুলকাবেন তাহলে সানন্দে মেনে নিন এই শর্ত।

এমনিতে কাউকে পুরস্কার দিয়ে সেটা ফিরিয়ে নেওয়ার এই ভঙ্গিটা অদ্ভুতুড়ে নাকি কুতকুতে সে প্রসঙ্গ নাহয় থাকুক তবে...। ‘পুরস্কারের শর্ত ছিল, পাণ্ডুলিপিটি প্রথমা থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবে’। তা শর্ত ভঙ্গ হয়েছে? বেশ তো, শর্ত ভঙ্গ করায় প্রথমা থেকে প্রকাশিত হবে না এটা বলাটাই যে সমীচীন ছিল।
প্রথম আলো বিভিন্ন পেশার লোকজশনকে পোষে এটা আমরা জানতাম কিন্তু সাহিত্যিক পোষার শখ যে এমন তীব্র এটা আমাদের জানা ছিল না।

সহায়ক সূত্র:
১. কুতুয়া রে: http://www.ali-mahmed.com/2015/01/blog-post_27.html

Sunday, January 18, 2015

চোখ খুললেই...।

চালু এই দৈনিকটির দাবী, ‘চোখ খুললেই প্রথম আলো’। এটা উচুমার্গের লোকজনের জন্য হতে পারে কিন্তু আমার মত সাধারণ মানুষের সঙ্গে এই বাণীটির বিশেষ যোগ নাই কারণ চোখ খুলেই আমার মত অতি সাধারণ মানুষ দৌড়াঝাঁপ শুরু করি লাগোয়া টাট্টিখানা হালের ওয়শরুমে। অতঃপর কি হয় সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনায় যেতে চাচ্ছি না।

২০১৩ সালে একটা লেখা লিখেছিলাম ‘খবরের পেছনের খবর’ [১] শিরোনামে। অনেকটা
ছবি সূত্র: প্রথম আলো, ১৩ জানুয়ারি ২০১৫
ওরকমই একটা ছবি ছেপেছে প্রথম আলো ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ সালে। এমন একটা ছবি যখন প্রথম আলোর মত পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হয় তখন এটাকে হালকা করে দেখার কোনও সুযোগ থাকে না। গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হয়। গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার পূর্বে আমার কিছু ‘কুশ্চেন’ ছিল। মতিউর রহমান ওরফে মতি ভাইয়ার কাছে কিছু সওয়াল এমন:

১. যে পুলিশ স্যার বন্দুক উঁচিয়ে রেখেছেন তারা কি এভাবে বন্দুক উঁচিয়েই রওয়ানা হন? গন্তব্যস্থলে না-পৌঁছা পর্যন্ত কি বন্দুক নামাবেন না?
২. পুরো যাত্রাপথে ভঙ্গি কি অদল-বদল হয় নাকি একই, এমনই থাকে?
৩. সর্বক্ষণ কি বন্দুক সেফটি-ক্যাচ অফ করা অবস্থাতেই থাকবে?
৪. গুলি করার পূর্বে সতর্ক করার জন্য কেমনতরো হুমকি দেওয়া হয়, ‘নড়োছো কি মরেছো’? বা 'হবরদার, মাথায় আলু বানিয়ে দেব কিন্তু...'।
৫. ছবিতে বোঝা যাচ্ছে না বিধায় জানার প্রবল আগ্রহ, এটা কি ব্রিটিশ আমলের অত্যাধুনিক (!) থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল, যেটা দিয়ে আদৌ গুলি বের হয় কিনা এটা একটা জটিল গবেষণার বিষয় (সরকার নিলামে তুললে যেটা এন্টিক হিসাবে সংগ্রহ করার গোপন ইচ্ছা আছে আমার)।
৬. পুলিশ স্যারের খাওয়া-দাওয়ার উপায় কি? নাকি অন্য কেউ খাইয়ে দেন?
৭. বাথরুম সমস্যার সমাধান কি? নাকি অন্য কেউ করিয়ে দেন?
মতি ভাইয়া সওয়াল-জবাব পর্ব সমাপ্ত করলে আমার আরও কিছু প্রশ্ন আছে তখন সেটা করা যাবেখন।

এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে লোকোমটিভের পাইলট ওরফে ড্রাইভার সাহেবকে। তেমন উল্লেযেযোগ্য বিশেষত্ব নেই। ছবিতে আলোর কারসাজির কারণে ভেতরটায় তেমন কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এমনতরো ছবিকে সাবানপানিতে ধোয়ার নিয়ম নেই বিধায় খানিকটা ব্রাইটনেস বাড়িয়ে দেয়া যাক।
এখন দেখা যাচ্ছে লোকোমোটিভের ভেতরে লোকজনের অভাব নেই। আরও লোকজন উঠার জন্য অপেক্ষায়মান। ঘটনা কী? বিশেষ কিছু না! এরা ড্রাইভার ওরফে পাইলট সাহেবকে মাথাপিছু টাকা দিয়েছে বিনা টিকেটে ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে।
রেলওয়েতে কঠিন নিরাপত্তা চলছে বটে! এদের কেউ যদি ‘ডেরাইভার’ সাহেবের চাঁদিতে দু-চার ঘা বসিয়ে অজ্ঞান করে ট্রেন থেকে ফেলে দেয় তাহলে আটকাচ্ছে কে! বা লোকেমেটিভের আগুন ধরিয়ে দেয়, ট্রেনটার নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নেয় অথবা ট্রেনটা দুর্ঘটনায় ফেলতে চায় তবে তাদের জন্য সেটা হবে জলবৎতরলং- পানির মত সোজা।

সহায়ক সূত্র
১. খবরের পেছনের খবর: http://www.ali-mahmed.com/2013/04/blog-post_14.html

Saturday, August 16, 2014

সযতনে পরিহার।

পরীক্ষার ফল দেওয়ার পর পত্র-পত্রিকায় নিয়ম করে বেশ কিছু ছবি ছাপা হয়। ছেলে-মেয়েদের উচ্ছ্বাসভরা ছবি। এদের হাসিমুখের ছবি দেখতে ভালই লাগে।

কিন্তু পত্রিকাওয়ালাদের ছাপাবার নমুনা বৈসাদৃশ্য লাগে। কাজটা অনেকেই করেন তবে এখন উদাহরণ হিসাবে প্রথম আলোকে বেছে নেওয়া যাক। এই পত্রিকাটিকে বেছে নেওয়ার পেছনে কারণটা হচ্ছে প্রথম আলো আমাদেরকে অনেক কিছু শেখায়- লাইক দেওয়া লাইকালাইকি শেখায়, শপথ করা শেখায়, শেখায় কারও পিতৃপ্রদত্ত নাম ছেঁটে দেওয়া বা দেশ যখন রানা প্লাজার লাশের মিছিল নিয়ে স্তব্ধ তখন নাচাগানা করে...।

এদের শপথে উদ্বুদ্ধ হয়ে অনেকের জীবন পাল্টে গেছে। এমনকি দুঁদে বুদ্ধিজীবীরাও মানুষ হয়ে গেছেন! শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান প্রথম আলোর শপথে দুরন্ত প্রভাবিত হয়ে তার বাসার কাজের ছেলেকে ল্যাকাপড়া শিখিয়েছেন [১] 

 

যাই হোক, দৈনিক #প্রথমআলো (১৪ আগস্ট ২০১৪) এসএসসি পরীক্ষা সংক্রান্ত ছেলেমেয়েদের আনন্দধারার ১৭টা ছবি ছাপিয়েছে। এরমধ্যে ১৫টা ছবি মেয়েদের। কেবল ২টা ছবি ছেলেদের। ভাগ্যিস, ২টা ছবি ছেলেদের দেওয়ায় চেপে রাখা শ্বাসটা ছাড়তে পারছি আমি নইলে একটা কুৎসিত ভজকট হয়ে যেত। দুম করে এটাই ভেবে বসতাম দেশে ছেলেরা কেউ পরীক্ষাই দেয়নি। বলা যায় না এই কারণে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে আমি জুকারবার্গের নাকে গদাম করে একটা ঘুসিই মেরে বসতাম। রে পাপিষ্ট জুকারবার্গ, তোর কারণেই, তোর কারণেই আমাগো ছেলেরা ফেসবুকে থেকে-থেকে এমন উচ্ছন্নে গেছে যে এরা পরীক্ষাটাও পর্যন্ত দেয়নি।

যাক, ওই ২টা ছবির কল্যণে জুকারবার্গের খাড়া নাক বেঁচে গেল। পুলিশের হাঙ্গামা থেকে বেঁচে গেলাম আমিও। নাকের জন্য বাচ্চু ভাই ওরফে মতি ভাইয়াকে জুকারবার্গ বেসুমার ট্যাকাটুকা দিলেও আপাতত আমি শুষ্ক ধন্যবাদ দিয়েই কাজ চালিয়ে নেব বলে স্থির করেছি।

 

কেউ-একজন আমাকে বলেছিল এই দেশের অধিকাংশ মাথওয়ালারা কোনও-না-কোনও প্রকারে প্রথম আলোর সঙ্গে জড়িত।  সেদিন আমি ওই মানুষটার সঙ্গে একমত হতে পারিনি কিন্তু আজ আর আমার এতে কোনও সন্দেহ নেই। জয় হোক প্রথম আলোর!

 

লেখার পেছনের লেখা: এই লেখাটায় আমি #চুতিয়া শব্দটা লিখতে গিয়ে সযতনে পরিহার করলাম। এর পেছনে সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। কে বলতে পারে একদা কেউ হয়তো জটিল আঁক কষে এটা বের করবে এখন পর্যন্ত আমি যে আট-দশটা লেখা লিখেছি তার মধ্যে গোটা বিশেক চুতিয়া শব্দটা আছে। জেনেশুনে এই ঝুঁকিটা নেওয়া চলে না।

১.আনিসুজ্জামানের শপথ:  http://www.ali-mahmed.com/2010/01/blog-post_03.html      


Tuesday, July 22, 2014

জাতীয় ফকির: আল্লার ওয়াস্তে একটা পইসা...



আমার বালকবেলায় প্রায়ই চোখে পড়ত এক ভিক্ষুক, অন্ধ মহিলা সুর করে ভিক্ষা করতেন। আল্লারওয়াস্তে একটা পইসা দিবেননি, বাজি। সেই দিন কোথায়- এখন আর কোনও পাগল ভিক্ষুকও ১ পয়সা চেয়ে ভিক্ষা করেন না।

দিন বদলেছে! ভিক্ষায়ও এসেছে বৈচিত্র। আজকাল লোকজনেরা লাইক- ভিক্ষা করেন। এই দেশে এখন জাতীয় এই-জাতীয় সেই, জাতীয় ভিক্ষুকও আছে। নমুনা। জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর পক্ষ থেকে লাইক ভিক্ষা চেয়েছেন সাইদুজ্জামান। পূর্বে সম্ভবত ভদ্রলোক লিখতেন দন্তস্য রওশন। এখন লেখেন কেবল দন্তস্য-এর সাইদুজ্জামান। রওশন নিজেই ছেঁটে দিয়েছেন নাকি মতি ভাইয়া এটা বলা মুশকিল। মতি ভাইয়ার আবার নাম ছাঁটাছাটির কুঅভ্যাস-কুপ্রবৃত্তি আছে। নামের আকিকা দেওয়ার বিপুল উৎসাহ আছে আমাদের মতি ভাইয়ার। আকিকার জন্য এতো ছাগল কোথায় পান এ এক রহস্য!

যাই হোক, সাইদুজ্জামানের লাইকভিক্ষাআহ্বান থেকে কিছু অংশ এখানে তুলে দেই (প্রথম আলো, ২০ জুলাই, ২০১৪):
লেখাটার শিরোনাম, লাইক দিয়েছ? সঙ্গে লাইক লেখা কিছু ডান্ডার ছবি।
এসো, আজ থেকে আমরা বন্ধুসভার ফেসবুক পেজে লাইক দেওয়া শুরু করি। আগামী ছয় মাসে আমরা ৫০ হাজার বন্ধু পেজে লাইক দেব।
প্রতিটি বন্ধুসভার যোগাযোগ ও প্রচার সম্পাদক রয়েছে। তাদের দায়িত্ব হলো লাইকের সংখ্যা বাড়ানো। প্রতিটি বন্ধুসভার বন্ধুদের তারা সচেতন করবে, উদ্বুদ্ধ করবে এ ব্যাপারে। আজ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে এ কর্মসূচি। যে বন্ধুসভার লাইক-সংখ্যা বেশি হবে, সেই বন্ধুসভার কথা ছাপা হবে।...
প্রতিটি বন্ধুসভার রয়েছে ২৫ জনের একটি কার্যকরী কমিটি। ফেসবুকে লাইক দেওয়া এই কমিটির প্রত্যেক বন্ধুদের জন্য বাধ্যতামূলক।...

আমি অসংখ্য ভিক্ষুক দেখেছি কিন্তু ভিক্ষা নিয়ে এমন ঘ্যানর ঘ্যানর করতে দেখিনি। আহ লাইক! সাইদুজ্জামানের এই লেখাটা পড়ে তো মনে হচ্ছে, বাতাসে দাও কৌপিন উড়াইয়া তবুও একেকটা লাইক নেব কুড়াইয়া।
আচ্ছা, এত্তো এত্তো লাইক নিয়ে এরা কী করবে! লাইক কচকচ করে চিবিয়ে খাওয়া যায় এমনটা তো শুনিনি! নাকি জুকারবার্গ লাইকের জন্য ট্যাকাটুকা দেয়?

প্রথম আলো পত্রিকাটিকে কেউ পছন্দ করুক বা না-করুক এটা অস্বীকার করার উপায় নেই মিডিয়া-টাইকুন এই প্রতিষ্ঠানটি এই দেশে অসম্ভব প্রভাবশালী। দোষ-গুণ একপাশে সরিয়ে রাখলে এরা নিজেরাই নিজেদের আলোয় উদ্ভাসিত। যেখানে এদের নিজস্ব উপায়ে যোগাযোগের অভাব নেই সেখানে ফেসবুকের লাইকের জন্য এদের যে তীব্র হাহাকার এটা যে অমর্যাদার তা এদের কে বোঝাবে। যেমনটা অমর্যাদার আনিসুল হকের মত লেককদের নিজেই নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন দেওয়া [১]

ফেসবুকে লাইকের জন্য অনেককে যে ছাবাল, খেলো, নীচ আচরণ করতে দেখি এতে করে মনে হয় লাইকেন জন্য পারলে এরা অবলীলায় নগ্ন হয়ে যাবে। এই অসভ্যতার কাতারে প্রথম আলো যোগ দিয়ে এটাই প্রমাণ করল এরা লোকজনকে শেখাবে কী, এদের নিজেদেরই তো শেখার অনেক বাকী...।

১. বিজ্ঞাপনতরঙ্গ-লেখকরঙ্গ!: http://www.ali-mahmed.com/2009/03/blog-post_21.html         

Monday, April 15, 2013

সেই দিন আর নাই রে, প্রথম আলো, হাসনাত আবদুল হাই!

আগের এক লেখায় 'টিভি ক্যামেরার সামনে মেয়েটি' এটার একটা হাইপার-লিংক ছিল [১]। ওখানে এখন ক্লিক করে দেখছি হাসনাত আবুল হাইয়ের ওই লেখাটা দেখাচ্ছে না। আমি ভুল না-করে থাকলে প্রথম আলো লেখাটা সরিয়ে ফেলেছে। প্রথম আলো পূর্বেও অজস্র বার বিভিন্ন অন্যায় করেছে কিন্তু কখনও ভুল স্বীকার করেনি। এবারও করবে এমনটা আমি মনে করি না।
কারণ এদের মধ্যে তীব্র অহংকার কাজ করে। কোনো এক লেখায় আমি লিখেছিলাম, এই গ্রহে ডায়নোসর নাই, সোভিয়েট ইউনিয়ন নাই, আদমজী জুটমিল নাই...।

লেখাটা সরিয়ে ফেললেই কী এমন ক্ষমাহীন অন্যায় আমরা ভুলে যাব? এটা স্পষ্ট এক চোরের লক্ষণ। যেটা করাটাই সমীচীন ছিল কেন এমন একটা লেখা ছাপা হলো তার পরিষ্কার একটা ব্যাখ্যা পাঠকের সামনে তুলে ধরা। পাঠককে নতজানু হয়ে সরি বলা। লেখককে কালো তালিকাভুক্ত করা এবং এই পাতার দায়িত্বে যিনি আছেন তাকে পত্রপাঠ বিদায় দেয়া।
সুমন্ত আসলামকে যেমনটা বিদায় করা হয়েছিল অথচ মজার বিষয় হচ্ছে, সুমন্ত আসলামই কেবল ওটার জন্য দায়ী ছিলেন না। মূল দায় যার ছিল সেই চালবাজ মানুষটা এখনও বহাল তবিয়তে এই পত্রিকায় আছেন এবং কেয়ামতের আগ পর্যন্ত এই পত্রিকায় সঙ্গে থাকবেন এমনটাই আমরা আশা করি। কারণ আমরা জানি তিনি বাচ্চু ভাইয়ের খুব পেয়ারের 'লুক'!

অথচ আলপিনের যে কার্টুন নিয়ে তুলকালাম কান্ড হয়েছিল, যে কারণে কার্টুনিস্ট আরিফকে প্রথম আলো ফাঁসিয়ে দিয়েছিল অথচ সেই বেচারার কোনো দোষই ছিল না। প্রথম আলো মা-বাপছাড়া এই অল্পবয়সি ছেলেটির জন্য কিছুই করেনি, কিচ্ছু না- আইনগত সহায়তাও না। বাচ্চু মিয়া যখন তওবা সেরে আসলেন তখন তিনি অনেক কথাই সেখানে বিজবিজ করে বললেন, বললেন না কেবল এই অভাগা ছেলেটির কথা।
আরিফ নামের এই ছেলেটিকে গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে তার সময়টা কাটছিল অসহ্য, দুঃসহ।


ড. মো: আনোয়ার হোসেনের 'রিমান্ড ও কারাগারের দিনলিপিতে' আমরা পাই:
"...সেখানে আলপিনের কার্টুন আঁকিয়ে আরিফুর রহমানকে রাখা হয়েছিল। ...এখনও বড় ভীত, কারণ কারাগারে আসার পর একজন কয়েদি লাঠিতে পায়খানা লাগিয়ে তার মুখে আঘাত করেছে। হুমকিও দিয়েছে অনেক (সে নবীর অপমান করেছে এই কারণে)।
...আরিফ জানাল, যে কার্টুনের জন্য তার এই হেনেস্তা, তার সংলাপগুলোও তার নয়।
"(পৃ নং: ৩৮)
 
আর আমাদের লেখক শ্রদ্ধাভাজনেষু, শ্রদ্ধাস্পদেষু হাসনাত আবুল হাই, স্যার, আপনারা তো এই সবই লিখে লিখেই আমাদেরকে মুগ্ধ করেন, না? তবে এখন আপনারা এটা বিস্মৃত না-হলেই ভাল করবেন সেই দিন আর নাই। যেমনটা আপনাদের সেই টাইপ-রাইটারও আর নাই।
আমরা এই প্রজন্ম নিজের আপন বাপকে ছাড়ি না আপনি কোন লাটসাব? ছেঁড়া স্যান্ডেলের মত আপনাকে ছুঁড়ে ফেলতে আমাদের হাত কাঁপবে এমনটাই ভাবছেন বুঝি। ভুল! আপনাদের সময়ে লোকজনেরা বলত, বংশ। আমাদের সময়ে আমরা বলি, জেনেটিক কোড। আপনার কোডে ঝামেলা আছে। বড় রকমের ঝামেলা আছে।
আমরা এও জানি আপনি একজন আমলা ছিলেন। আমলা এবং গামলার মধ্যে খুব একটা ফারাক নাই। গামলার মাধ্যমে মানুষ যেমন নোংরা মোজা, নোংরা অর্ন্তবাস ধৌত করে; তেমনি আমলাকেও, যিনি যখন ক্ষমতায় থাকেন তিনি তার সমস্ত আবর্জনা তার মাধ্যমেই ধৌত করান।

ওহে প্রথম আলো, সেই দিন আর নাই রে, পাগলা। দিন বদলেছে। সফটকপি সরিয়ে ফেলেই বুঝি আমরা বিস্মৃত হব। হার্ডকপি থেকে আমরা সফটকপি করব। সযতনে ওয়েবে রেখে দেব। কেউ-কেউ ভুলে যাবে কিন্তু ব্যাটা গুগল ঠিকই মনে রাখবে।


*পরে জানা গেল প্রথম আলো ক্ষমা চেয়ে একটা বিবৃতি প্রকাশ করেছে:
"১৪ এপ্রিল ২০১৩ তারিখের প্রথম আলোর বাংলা নববর্ষের ক্রোড়পত্রে হাসনাত আবদুল হাই রচিত ‘টিভি ক্যামেরার সামনে মেয়েটি’ শীর্ষক ছোটগল্পে ব্যক্ত মতামত এই পত্রিকার নীতি ও আদর্শের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। অসাবধানতাবশত লেখাটি মুদ্রণের জন্য প্রথম আলো আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং পাঠকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। []" 

মন্দের ভালো তবে এই অপরাধের জন্য কেবল এই উদ্যোগকেই আমি যথেষ্ট মনে করি না।

সহায়ক সূত্র:
১. লুঙ্গি-ছাগল-হাই-প্রথম আলো: http://www.ali-mahmed.com/2013/04/blog-post_15.html
২. প্রথম আলোর ক্ষমাপ্রার্থনা: http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-04-14/news/344974



**কৃতজ্ঞতা, লেখাটির স্ক্রিণশট দিয়ে সহায়তা করেছেন: Mohammad JF Shimul , Murad Hafiz, হিমাংশু মাহের

Sunday, April 14, 2013

খবরের পেছনের খবর।

পূর্বেও আমি লিখেছিলাম, মিডিয়া আমাদেরকে যা খাওয়াবে আমরা তাই খাব, সানন্দেই খাব। আমাদের দেশের ১০টা প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া মিলে যদি ঠিক করে আজ আমরা দেশবাসীকে ইয়ে খাওয়াব, আমরা অজান্তে তাই খাব।
ছবি ঋণ: যায়যায়দিন
আগুন ধরাবার ভাল একটা ছবি কতটা আবেদন রাখে মিডিয়ার কাছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এবং আমি নিশ্চিত, কিছু ক্ষেত্রে তা ঘটে ফটোসাংবাদিকের ইন্ধনে। অন্তত এমন কিছু  ঘটনার কথা আমাদের জানা আছে। কিন্তু সেইসব খবরের পেছনের গল্পগুলো সামনে আসে না। আসে না সাজানো ফটোসেশনের গল্প!

যেমন আমরা সাংসদ ফারুকের উপর পুলিশের চড়াও হওয়াটা তীব্র নিন্দা জানিয়েছিলাম, আমি নিজেও এ নিয়ে কঠিন এক লেখা লিখেছিলাম। কাজটা অতি কুৎসিত এতে কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু আজ একটা ভিডিও দেখলাম, যেখানে সাংসদ ফারুক, তিনি যে কী উগ্র একজন মানুষ এবং তাঁর আচরণ কোনো প্রকারেই একজন সাংসদ দূরের কথা, বাজারের নেতারও শোভা পায় না! অন্তত একজন সভ্য মানুষের...।

এই সাংসদ ফারুকের মত প্রথম সারির নেতারা যখন হরতালে নিজ হাতে চলন্ত বাসে ঢিল ছোঁড়েন তখন তা আমরা খুব সমীহের দৃষ্টিতে দেখি। মিডিয়ায় ফটাফট ছবি ছাপা হয়, হরতাল সফল বলে দাবীও করা হয়। আমরা ...রা আবার এর নাম দিয়েছি পিকেটিং। এতে কার চোখ গেল, কোন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পড়ল এটা জানার আগ্রহ আমাদের নাই। একজন গর্ভবতীর মার গর্ভ নষ্ট হলো এতেও আমাদের খুব-একটা কিছু যায় আসে না। আল্লার মাল আল্লা নিয়ে গেছে। কেবল মার সেই অদেখা শিশুটি নিভে যাওয়া চোখে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে রয়, এই-ই তাহলে গণতন্ত্র!


পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে চলন্ত গাড়িতে ঢিল ছোঁড়াটা গণতান্ত্রিক অধিকারে পড়ে বলে এমনটা অন্তত আমার জানা নাই। হয়ে থাকলেও সেই দেশটাকে আমি সভ্য বলতে নারাজ- সেটা সুইটজারল্যান্ড হোক বা কঙ্গো!
এটা মিডিয়ার কাছেও বছরের-পর-বছর ধরে খুবই প্রিয় একটা বিষয় ছিল, পিকেটিং। কিন্তু পিকেটিং-এ যখন মিডিয়ারই গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেয়া হয় তখন আর ভাল লাগে না। তখন মিডিয়াকর্মীর হাহাকারভরা ফেসবুক স্ট্যাটাসও প্রসব হয়, 'উহারা কী মানুষ'!

গতকাল স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছি একজনের অপক্ষোয়। ওমা, ট্রেন ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে মিডিয়াকর্মীদের ছুটাছুটি শুরু হয়ে গেল। ঘটনা কী! ঘটনা অসামান্য। আজ থেকে রেল ট্রেনে নিরাপত্তা দেবে। ভাল তো, সমস্যা তো নেই।

ছবি ঋণ: প্রথম আলো, ১১ এপ্রিল ২০১৩
তো, এই নিরাপত্তা দেয়া নিয়ে এরা ফটোসেশন করবেন, অধিকাংশ মিডিয়াকর্মীকে খবর দিয়ে এনে জড়ো করা হয়েছে। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে ট্রেনের সামনে বুক চিতিয়ে পোজও দেয়া হলো। আমি হতভম্ব। পুরো বিষয়টার মধ্যেই এক ধরনের চালবাজি কাজ করছে এবং মিডিয়া জেনেশুনে এতে কেবল সায়ই দিচ্ছে না, অন্যায়টা উসকেও দিচ্ছে।

আমি অপেক্ষায় ছিলাম, হয়তো পত্রিকায় এই খবরটা ছাপা হবে না বা দায়সারা গোছের একটা খবর হবে। ওয়াল্লা, আজকের প্রথম আলোর প্রথম পাতায় দেখছি (অন্য এক স্টেশনের, চট্টগ্রাম) রেলে পুলিশ ভাইয়াদের নিয়ে বিশাল এক ছবি ছাপা হয়েছে। কালের কন্ঠও ছাপিয়েছে তবে পেছনের পাতায়। কিন্তু ছবির ভঙ্গি একই!


চট্টগ্রামে তোলা ওই ছবিটার ভঙ্গিটাই এমন, এই ছবিটা যে আয়োজন করে তোলা এটা অন্তত একটা বাচ্চারও বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা না। এটা দেখে আমার মনে পড়ে যাচ্ছে আগেকার দিনে মৃত বাঘের উপর পা রেখে ছবি উঠাবার একটা চল ছিল। পরে এলো, স্টুডিওতে টেলিফোন উঠিয়ে টেলিফোন করার পোজ, বা খানিক আধুনিক হলে গিটার নিয়ে। অন্য পত্রিকায়গুলো দেখার সুযোগ হয়নি, ওগুলোতেও এমন ছবি ছাপা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এটা যে আয়োজন করে উঠানো একটা ছবি এটা বোঝার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নাই। অতি হাস্যকর একটা ছবি! আর এই সমস্ত আবর্জনা-মার্কা ছবি রেলপুলিশের নিজেদের বের করা সাময়িকীতে থাকলেই খানিক মানানসই হত। যেগুলো মানুষ বিনে পয়সায়ও নিতে চায় না। চালু দৈনিকগুলোতে কেন!

ছবিটা দেখে আমাদের কী এমনটা মনে হচ্ছে না, ওটা একটা লোকোমোটিভ (প্রথম আলোর ভাষ্য মতে, ট্রেনের ইঞ্জিন) না, আস্ত একটা ট্যাংক। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে অস্ত্র হাতে যে দু-জন যে ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছেন, মনে হচ্ছে যুদ্ধের ময়দানে আছেন। ঘোর যুদ্ধ চলছে। চারদিকে কেবল গুলির শব্দ, ঠা-ঠা-ঠা।

এই দুই বাহাদুর দুম-দুম করে গুলি ছুঁড়ছেন। কাকে? ফটোসাংবাদিককে কি না, কে জানে! ভাগ্যিস, ছবিটা প্রথম আলোর কোনো ফটো সাংবাদিককে তোলেননি, নইলে তিনি মরলে আর বাঁচতেন না (কারণ ফটোসাংবাদিকের জায়গায় লেখা আছে, ছবি: প্রথম আলো)। প্রবল আশা, প্রথম আলো আসলে কোনো ফটোসাংবাদিকের নাম না। তাহলে? তাহলে আমরা যে এটাও বুঝে উঠতে পারি না ছবিটা কী এই অফিসের চাপরাসি উঠিয়েছেন নাকি সম্পাদক বাচ্চু ভাই নিজে?

ভাল কথা, আমার জানার খুব আগ্রহ, যেভাবে রেল-পুলিশ দাঁড়িয়ে আছেন, এরা কি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা বা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এভাবেই দাঁড়িয়ে  থাকবেন? আহা, ভাইজানেরা কী একবারও বসবেন না...

*প্রথম ছবিটা হচ্ছে এমন (যায়যায়দিন ২১.০৬.০৬): ধানমন্ডিতে কয়েকজন পিকেটাররা ঢিল ছোঁড়াছুঁড়ির পর্ব শেষ করে ফটোসেশন হচ্ছে।  

Wednesday, April 10, 2013

টাকার অংকটাই কেবল মূখ্য!

অবগতি: এই মতিউর রহমান সেই মতিউর রহমান না! ইনি পত্রিকার বিখ্যাত একজন সম্পাদক, প্রকাশক। কুখ্যাত মতিউর রহমান না।

প্রথমেই অবগতির প্রসঙ্গে আসি। আমাদের সবার শ্রদ্ধেয় মতি ভাইয়া নামের শেষে একটা কোপ দেন। যেমন ধরুন, আপনার নাম নুরুজ্জামান মানিক। তিনি কোপ দিয়ে মানিক ফেলে দেবেন। নামটা দাঁড়াবে, নুরুজ্জামান।
তো, মতি ভাইয়ার তরিকায় এখন কুখ্যাত মতিউর রহমান নিজামীর 'নিজামী' কোপ দিয়ে ফেলে দিলে ওই মানুষটাও হবেন, মতিউর রহমান।
আপনারা যেন অতি বিখ্যাত সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে কুখ্যাত মতিউর রহমান নিজামীকে গুলিয়ে না-ফেলেন এই কারণেই অবগতি।

মতি ভাইয়ার এই 'কোপাকোপিতে' অন্যদের সমস্যা না-হলেও ব্লগারদের সমস্যা হয়ে যায়। ব্লগার ব্যতীত সবাই লেখালেখি করে এন্তার টাকা কামান। এখন বেচারা ব্লগারদের হয়েছে যত যন্ত্রণা- টাকাও নাই, ন্যূনতম সম্মানও নাই। অথচ মতি ভাইয়ার কোপাকোপির পর নতুন করে নামের আকিকা দিতে গেলে যে ছাগল লাগবে ব্লগারদের সেই ছাগল কেনারও পয়সা কই! অবশ্য মতি ভাইয়ার নিয়ন্ত্রণে ছাগলের স্টক থাকলে সহায়তা হিসাবে দিলে অনেকে বেঁচে যেত। আমি তাঁর কাছে আকুল আবেদন জানাই...। 

যাই হোক, একটা হেল্প চাচ্ছিলাম। 'একটা হেল্প চাচ্ছিলাম' এটা বলতে এখন সংকোচ হয়। কারণ আমার এই সাহায্য চাওয়াটা প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়াচ্ছে! অনেকটা এই রকম, ভাই, একটা 'পুইসা' দিবেন? ভিক্ষুক-ভিক্ষুক টাইপ। তথ্যভিক্ষুক।

যে তথ্যটা দরকার। আজ প্রথম আলোর প্রথম পৃষ্ঠায় যে বিজ্ঞাপনটা ছাপিয়েছে, তা এক 'দন্তবটিকার'। বিজ্ঞাপন না-দিলে পত্রিকা চলে না এটা যে আমরা বুঝি না এমন না। ভেতরে প্রয়োজনে ৪ পাতা বিজ্ঞাপন ছাপাক কিন্তু তাই বলে এই অবস্থা! এই কান্ড দেখে আমার কাছে মনে হচ্ছে, কেবল নগ্নগাত্রই অশ্লীল, কে বলে...!
কারো কী জানা আছে এমন একটা বিজ্ঞাপন ছাপাতে মতি ভাইয়াকে কত টাকা দিতে হয়?

না-না, আমি কেবল হিসাবটা করতে চাচ্ছিলাম, এর দ্বিগুণ টাকা দিলেই মতি ভাইয়া পুরো পৃষ্ঠাব্যাপি বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে দেবেন। তখন কেবল পত্রিকায় প্রথম আলোর লোগোটাই থাকবে। লোগো থাকুক, এই নিয়ে আর হুজ্জতে যাই না। ৮০০ পয়সা খরচ করে আমরা যে বিজ্ঞাপন পড়তে পারছি এটাও তো কম না!

Wednesday, March 6, 2013

আমাদের মিডিয়া!

আজকের অতিথি লেখক, আবদুল্লাহ-আল-ইমরান (http://www.facebook.com/netpoke)। মানুষটার দেখি কিছুই চোখ এড়ায় না- 'ঈগলচক্ষু! তিনি লিখছেন:
ছবি সূত্র: প্রথম আলো, ০১.০২.২০১৩

Tuesday, March 13, 2012

মাতব্বর!

­বিষয়টা পুরনো কিন্তু আবারও নতুন করে সামনে চলে এসেছে, ফেসবুকের একটি নোটের সূত্র ধরে। অনুবাদের একটা বিষয় নিয়ে সালাহ উদ্দিন শুভ্র, ফারুক ওয়াসিফের বিরুদ্ধে কঠিন এক অভিযোগ এনেছেন [১]। ফারুক ওয়াসিফও পাল্টা এক নোট লিখে এর উত্তর দিয়েছেন [২]। কে ঠিক কে বেঠিক এটা আমার আলোচনার বিষয় না। এটা প্রমাণের দায় এঁদের উপরই বর্তায়। তাঁরা নোট চালাচালি করতে থাকুন...

Thursday, January 12, 2012

তিতাস: ধন্যবাদ, প্রথম আলো

তিতাস নিয়ে শেষ লেখাটায় বলেছিলাম, অচিরেই এই রাস্তা-বাঁধটা অপসারণ করা হবে [১]। এখন বলা যেতে পারে অতি দ্রুতই এই কাজটা এরা শুরু করেছিলেন। ধন্যবাদার্হ!

আমাদের প্রিন্ট মিডিয়ার অনেক 'নখরামি'। এমনিতে নখরায়ুধদের নখ দেখা যায় বটে কিন্তু মিডিয়ার নখ থাকে অপ্রকাশ্যে! এদের কর্মকান্ড বোঝা ভার।
আর এরা কখন কোন প্রতিবেদন ছাপাবেন তা নির্দিষ্ট করা আছে। যেমন ধরা যাক, মুক্তিযুদ্ধসংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন। ডিসেম্বর, মার্চ না-এলে এরা কলমই স্পর্শ করবেন না। দশ মাস কলম চিবুতে চিবুতে ইকড়ি-মিকড়ি খেলা খেলবেন। এরপর...এরপর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে অন্তর্বাস ভিজিয়ে ফেলবেন। সেই অন্তর্বাস রোদে মেলে দিয়ে রোদ পোহাবেন।

Sunday, April 24, 2011

শিক্ষক যখন প্রকৃতি এবং জাপান


জাপানে হয়ে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং সুনামির খবর পুরনো। লিখব লিখব করেও এই প্রসঙ্গ নিয়ে কেন যেন লেখা হয়ে উঠেনি! সবিরাম, মাথায় ঘুরপাক, প্রকৃতির কাছে আমরা কী অসহায়! ছবির মত সাজানো গোছানো একটা দেশ, জ্ঞান-বিজ্ঞানে সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া দেশটা কি কখনও ভেবেছে আজকের এই দিন দেখতে হবে! বুকে হাত দিয়ে বলুক।

কোন একটা লেখায় আমি বলেছিলাম, "জ্ঞান। কবেকার জ্ঞান? সময়টা বড়ো জরুরি।"
যেদিন আমরা আগুন জ্বালানো শিখলাম সেদিনও আমরা ভেবেছিলাম অভূতপূর্ব জ্ঞান এখন আমাদের মুঠোয়। এখন একটা বাচ্চারও আগুন জ্বালাবার জ্ঞান করায়ত্ত। আজ যে জ্ঞান নিয়ে আমরা অহংকারে ডুবে থাকি কিছু বছর পর ওই জ্ঞান বড়ো খেলো মনে হবে।
মানুষ যখন ভেবে বসে প্রকৃতির সমস্ত রহস্য তার জানা হয়ে গেছে, প্রকৃতির সঙ্গে তার লেনদেন শেষ হয়ে আসছে; প্রকৃতি নামের শিক্ষকের বেত ঝাঁ করে নেমে আসে। এই বেত কার পিঠে পড়ল এই নিয়ে মাথা ঘামাবার সময় প্রকৃতির কই!

অসাধারণ এই ছবিটা দেখে আমরা কী কিছু শিখলাম? প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারও হাত নেই তবুও ওই দেশের বিদ্যুৎ বিভাগের শীর্ষস্থানীয় লোকজনেরা আশ্রয়কেন্দ্রের আশ্রয়ে থাকা লোকজনের সামনে মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে যেটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না! আমাদের দেশের বড়ো বড়ো আমলা-গামলা মহোদয়গণ এমনটা দূরের কথা অন্তত তাঁদের পশ্চাদদেশ উত্তোলনপূর্বক খানিকটা ক্লেশ স্বীকার করবেন, ভাবাই যায় না

এমন অসাধারণ একটা ছবি! ছবিটা ছাপা হয়েছে প্রথম আলোয়, 'জাপানি সহনশীলতার নমুনা' লেখায় [১] কিন্তু আমি বুঝে উঠতে পারছি না আসলে এই ছবিটা উঠিয়েছে কে? ওখানে কিছুই লেখা নেই, কারও নাম নেই! এটা কি প্রথম আলোর কোন 'ক্যামেরাবাজ' জাপানে গিয়ে ফটোটা পাকড়াও করেছেন নাকি মতিউর রহমান স্বয়ং স্যাটেলাইটের 'নরোমতারের' মাধ্যমে এই ছবিটা তুলেছেন?
এই ছবিটার সঙ্গে প্রতিবেদনটার নীচে লেখা 'বার্তা সংস্থা অবলম্বনে'। নাকি এই ছবিটা বার্তা সংস্থার? আচ্ছা, এই বার্তা সংস্থার ঘটনাটা কী! বার্তা সংস্থা নামে কি কোন বার্তা সংস্থা আছে? কি জানি, আমার জানার পরিধি খুব ছোট। 'খবরের কাগজ' নামে যদি সাপ্তাহিক পত্রিকা থাকতে পারে তাহলে বার্তা সংস্থা নামে বার্তা সংস্থা থাকলে দোষ কোথায়! নাকি এই বার্তা সংস্থার মা-বাপ নাই, এতিম!

এখন কাজের কথা হচ্ছে ছবিটা কার? জানাটা জরুরি কারণ ছবি নিয়ে ফাজিলিয়া খেলাধূলা করার জন্য প্রথম আলোর [১] কোন ক্লান্তি নেই। পূর্বের মত এমনটা হওয়াও বিচিত্র কিছু না! সবাই শেখে, শেখে না কেবল প্রথম আলো- এদের শেখা যে শেষ...

*ভিডিও ঋণ: ABCNews
*ছবি ঋণ: এটা মতিউর রহমান ভাল বলতে পারবেন। 

সহায়ক সুত্র:
১. জাপানি সহনশীলতা...: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=35&date=2011-04-22
২. প্রথম আলো: http://www.ali-mahmed.com/2010/11/blog-post_07.html

Sunday, November 7, 2010

প-তে পাকস্থলী, প-তে প্রথম আলো

পাকস্থলী জিনিসটা লা-জবাব! এ সব হজম করে ফেলে কিন্তু নিজে হজম হয় না। লাগাতার এই কান্ড করেই যাচ্ছে, পাকেপ্রকারে। এর একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কপচানো এখানে এই লেখার মূল উপজীব্য না। তাই বলে মানুষের পাকস্থলি কেন বিষাক্ত এসিড হজম করতে পারে না এই নিয়ে কুতর্কে যাই না।
মোদ্দা কথা, পাকস্থলি সব হজম করে ফেলে, আকৃতি বদলে ফেলে কিন্তু নিজে নিজেকে হজম করে না, অবিকৃত থাকে।

প্রথম আলোর অবস্থাটা অনেকটা এমনই। এরা সব বদলে ফেলতে চাচ্ছে কিন্তু নিজেরা বদলাবে না বলে পণ করেছে। বদলাবে না পণ করেছে এটা ভুল বললাম আসলে এদের ধারণা, এদের বদলাবার কোন অবকাশ নাই- পাকস্থলী যে!
প্রথম আলো নিয়ে লিখব না বলে আমিও পণ করেছিলুম কারণ দেখা গেছে এদের নিয়ে লিখতে গেলে অন্য সমস্ত লেখালেখি বাদ দিতে হয়। এমনিতেও প্রথম আলোকে নিয়ে প্রচুর লেখা হয়েছে [১], এখন এদের নিয়ে লেখা আমার কাছে মনে হয় 'ফিযুল', স্রেফ শব্দের অপচয়। 'প্রকাশনার ১২ বছর', এটাকে সামনে রেখে ঢোলের শব্দে কান পাতা দায়! অবশ্য যেখানে প্রথম আলোকে নিয়ে এই দেশের সুশীলরা তেলতেলে লেখা লিখছেন সেখানে এই মুহূর্তে প্রথম আলোকে নিয়ে কোন তেলিবেলির লেখার চেষ্টা করাটা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে মনে হয় না।

কেবল আসিফ নজরুলকে প্রথম আলোয় দেখলাম খানিকটা অন্য রকম লেখা লিখতে, 'প্রথম আলো: পাঠকের কাঠগড়ায়' [২]। যে আসিফ নজরুলকে আমরা দেখি টক-শোতে টক টক করে অনবরত সমালোচনায় মুখর হতে সেই আসিফকেই আমরা এখানে দেখি মৃদু লাটিচার্জের মত মৃদু-মৃদু কথা বলতে। তিনি লিখেছেন, "বিজ্ঞাপন আগ্রাসন থেকে এটি অনেক পত্রিকার তুলনায় মুক্ত। কিন্তু প্রথম আর শেষ পাতার অর্ধেক বিজ্ঞাপনে ভরে গেছে এমন ঘটনা প্রথম আলোর ক্ষেত্রেও কখনো কখনো ঘটে"।

কখনো কখনো? হা হা হা। আসিফ নজরুলের শব্দের খেলা দেখে আমি মুগ্ধ, এই মুগ্ধতা অবশেষে কৌতুকে পরিণত হচ্ছে। ৫ নভেম্বর, এই দিন আমি যদি বিশেষ সংখ্যা বাদও দেই; কেবল মূল কাগজ নিয়েই যদি আলোচনা করি, এই দিনই প্রথম এবং শেষ পৃষ্ঠার ভরানো বিজ্ঞাপনের কথা যদি বাদও দেই। এবং বাদ দিলাম ভেতরের অন্য পৃষ্ঠার অর্ধেক পৃষ্ঠাব্যাপি বিজ্ঞাপনও। তারপরও ৬, ১৭, ১৮ পৃষ্টায় ক-লাইন সংবাদ এটা আসিফ যদি আমাদেরকে একটু জানাতেন। আপনার কাছে স্কেল না-থাকলে নিয়ে আসুন আপনার আইনের বই। পত্রিকার উপর রেখে এড়ি-দুড়ি-তেলকা এই পদ্ধতিতে মেপে দেখি গোটা পত্রিকায় কয় হাত খবর এবং কয় হাত বিজ্ঞাপন?
ছবি ঋণ: প্রথম আলো
যাগ গে, বিজ্ঞাপন নিয়ে লেখার ইচ্ছা আমার ছিল না। বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে খবর পেলেই আমরা পাঠক আনন্দে উল্লসিত হই এবং সুশীলরা পুচ্ছ আন্দোলিত করেন; সাদা-সাদা গোঁফসহ ঝড়ের গতিতে হাজির হয়ে যান।
৫ নভেম্বরের বিশেষ সংখ্যায় এই ছবিটা ছাপা হয়েছে। আমি এটাকে ছবি বলব না, একটা মাস্টারপীস!
এই ছবিটা গত বছর যখন আমি দেখি তখন হতভম্ব হয়ে ভাবছিলাম, কেমন করে এই ছবি ধারণ করা সম্ভব? এই ছবিটা আমার মাথা কী এলোমেলোই না-করে দিয়েছিল! পারতপক্ষে কোরবানির কোন পশুর কাছে যাই না, আমি সহ্য করতে পারি না। কিন্তু এই ছবির প্রভাব সমস্ত হিসাব গোলমাল করে দিল।
সত্যি বলছি, গরুর চোখের শত-শত ছবি উঠালাম কিন্তু কোনটাই আমার মনে ধরল না। যে সুবিধাটা এই আলোকচিত্রি পেয়েছিলেন তা আমি পাইনি। আমার ছিল দুর্বল লেন্সের একটা ক্যামেরা, সাবজেক্ট হিসাবে মাত্র একটা গরু এবং যেখানে গরুটা বাঁধা ছিল সেখানে আলোর সমস্যা। সূর্য ছিল গাছের আড়ালে, আলোর ঠিক প্রতিফলনটা পাচ্ছিলাম না। শত-শত ছবির মধ্যে কেবলমাত্র একটা ছবি আমার পছন্দ হয়েছিল, যে ছবিটা রূপান্তর [৩] নামের একটা লেখায় ব্যবহার করেছিলাম।

তো, প্রথম আলোর এই ছবিটার সঙ্গে সমস্ত তথ্যই আছে। গরুটা ওই সময় কি ভাবছিল, খুঁজছিল এটাও মতি ভাইয়া আমাদেরকে জানিয়েছেন কিন্তু ছবিটা কে উঠিয়েছেন এই তথ্যটা দিব্যি চেপে গেছেন। এটা ছবিটা কি স্বয়ং গরু উঠিয়েছে, না মতি ভাইয়া, নাকি এই অফিসের কোন চাপরাসি এই তথ্যটাই কেবল জানা যাচ্ছে না। মতি ভাইয়া গং, এঁরা যে এই ফাজলামিটা কেবল আজই করলেন এমন না অতীতে বহুবার করেছেন। এই সব ফাজলামি নিয়ে আমি নিজেই অনেক লেখা লিখেছি [৪]
নির্বোধদের কে বোঝাবে, একটা ছবিও একজনের কাছে সন্তানের মত। কোন দৈনিকে কাজ করলেই সেই দৈনিকের কোন অধিকার নাই সেই ছবিটাকে জারজ বানিয়ে দিতে। একটা ছবি উঠাবার জন্য কেমন দক্ষযজ্ঞ করতে হয় [৫] , দালির ছবি উঠাবার নমুনা দেখলে খানিকটা আঁচ করা যাবে। কেভিন কার্টার একটা ছবির বদৌলতে কেমন করে অমর হয়ে যান এই সব মতি ভাইয়ার মাথায় আদৌ ঢুকবে বলে আশা করি না।

ঋণ: প্রথম আলো/ ৫ নবেম্বর, ২০১০
তবে মতি ভাইয়ার খানিকটা উন্নতি হয়েছে। এই বিশেষ সংখ্যায় অজস্র ছবি ছাপা হয়েছে এবং আলোকচিত্রির নাম দেয়া হয়েছে এভাবে। এটা বেশ হয়েছে।

এটা মনে হয় মতি ভাইয়ার একটা খেলা, 'চিত্রজট' খেলা। পাঠকের উদ্দেশ্যে তিনি হাসি মুখে বলবেন, বেছে নাও..., চিত্র এবং চিত্রর বাপকে বেছে নাও। পাঠকও বিমলাননন্দে এই খেলায় ঝাঁপিয়ে পড়বে। এই নিয়ে 'কুটি-কুটি' এসএমএস প্রথম আলোর অফিসে জমা হবে। তড়িঘড়ি করে জেনারেলদের সঙ্গে মিটিং ফেলে মতি ভাইয়া সেনানিবাস থেকে অফিসে ছুটে আসবেন। প্রথম আলো ঘরানার সাদা গোঁফঅলা সুশীলরা আসবেন, গোঁফ সহ। আসবেন গাতকরা। গানও গাইবেন, কো-ও-ন ছওও-বি-র কোওওও-ন বা-প/ খুঁ-জ-তে গিই-য়ে বুওওও-কে ধওওও-র-লো হাঁআআআআ-প।
সে এক বিপুল আয়োজন!     

সহায়ক লিংক:
১. প্রথম আলো: http://tinyurl.com/3yadh4k
২. আসিফ নজরুল: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=13&date=2010-11-05
৩. রূপান্তর: http://www.ali-mahmed.com/2009/11/blog-post_1172.html 
৪. ছবি নিয়ে ফাজলামি: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_488.html
৫. দালি: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_6543.html
৫. কেভিন কার্টার: http://www.ali-mahmed.com/2009/10/blog-post_3172.html 

Friday, August 27, 2010

ধন্যবাদ প্রথম আলো

৬ আগস্ট যখন প্রথম আলোয় যখন এই সংবাদটা পড়ি তখন যথারীতি মেজাজের কাঁটা উর্ধ্বগতি। মনে মনে কষ্টের শ্বাস গোপন করি, কেউ কেউ কখনও বদলায় না, কেবল অন্যদেরকেই বদলাবার জন্যই আদাজল খেয়ে নামে! শেষের পাতায় খবরটা এক কলাম ইঞ্চি ছাপা হয়েছিল, "সম্পদের অর্ধেক দান করার ঘোষণা ৪০ ধনকুবেরের"।
আমি অহেতুক ভেবে ভেবে সারা, এটা কেন ফলাও করে প্রথম পাতায় এলো না? কেন এই খবরটা নিয়ে সম্পাদকীয় ছাপা হবে না? কেন এই খবরটা নিয়ে আমাদের দেশের দুধর্র্ষ কলামবাজরা ঝাপিয়ে পড়বেন না, কলাম লিখে লিখে পাতা ভরিয়ে ফেলবেন না?

এই খবরটা গুরুত্ব কী অপরিসীম এটা কেন আমরা অনুধাবন করতে পারলাম না? আমার সুযোগ থাকলে এঁদের ছবি বাঁধিয়ে প্রত্যহ ধূপ-ধুনা দিতাম। এঁদের এই একটা অভাবনীয় সিদ্ধান্ত, কোটি-কোটি মানবসন্তানের কল্যাণে ব্যয় হবে- এই গ্রহে আর কী চাওয়ার থাকতে পারে!
এই উদ্যোগটা নিয়ে ফলাও করে লিখলে যদি আমাদের দেশের কেবল একজন মাত্র ধনকুবেরের মত পরিবর্তন হয় সেটা কী এক অসাধারণ বিষয় হবে এটা আমার কল্পনাতেই আসে না। কেন আমি এটা আশা করতে পারব না, আমাদের দেশের একজন ধনকুবেরের ওদের মত মাথা এলোমেলো হবে না?

একজন ধনকুবের লাগে না, সামান্য একটা উদ্যোগ কেমন পরিবর্তন নিয়ে আসে এর ছোট্ট একটা উদাহরণ। 
সুদূর আমেরিকা থেকে একজন ৪০০ ডলার পাঠিয়েছেন। টাকাটা হাত ঘুরে আমার কাছে এসেছে। আমার আনন্দিত হওয়ার কথা কিন্তু খানিকটা বিমর্ষ হয়ে গেলাম! এই টাকাটা আমাদের দেশের হতদরিদ্র মানুষদের জন্য ব্যয় হবে। শর্ত আছে, টাকাটা ব্যয় হবে মুসলমানদের জন্য, খাবার-দাবারের পেছনে এবং রমযানের মধ্যেই টাকাটা ব্যয় করতে হবে। আমার জন্য এটা একটা কঠিন শর্ত এবং অপছন্দের। যদি বলা হতো ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য তাহলে আমার আপত্তির কারণ ছিল না। ক্ষুধার্ত তো ক্ষুধার্ত, হিন্দু-মুসলিম-খ্রীস্টান কী! একবার মনে হয়েছিল, না করে দেই কারণ ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কাজ করে আমি আরাম পাই না। অনেক ভেবে দেখলাম, কাজটা আমার অপছন্দের হলেও আমার কারণে কিছু মানুষ কেন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে?

যিনি মাধ্যম, তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হয় এর অধিকাংশ টাকা ব্যয় হবে 'ঈশ্বরের বিশেষ সন্তানদের স্কুলের' [৩] পরিবারে লোকজনের মধ্যে। এঁরা এমন না যে দু-বেলা খেতে পান না। তাই আমরা ভেবে ঠিক করলাম, প্রত্যেক পরিবারে জন্য পর্যায়ক্রমে মাংশের (গোশত লেখার নিয়ম সম্ভবত, মাংশ নাকি মুরতাদের শব্দ!) ব্যবস্থা করা হবে। এই মাংশের কল্যাণে এঁদের এবং এঁদের বাচ্চা-কাচ্চাদের শরীরে খানিকটা প্রোটিন যোগ হবে। মন্দ কী!
আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম, সেই সুদূর আমেরিকা প্রবাসী একজনের টাকায় কেনা মাংশ খাচ্ছে দূর্গম এক এলাকার কিছু মানুষ!

ধরে নিলাম নিরুপায়, এরা লক্ষ-লক্ষ উট গুলি করে মেরে ফেলবে [৪] কিন্তু আমাদের দেবে না। হারামজাদারা, কেবল মুখ ফুটে একবার বললেই হতো আমরা এদের পোতাশ্রয় থেকে নিজ খরচে জাহাজ ভরে ভরে নিয়ে আসতাম। আমার জানার খুব আগ্রহ, অস্টেলিয়ায় আমাদের দূতাবাসের স্যাররা কি একবারও এদের বলে দেখেছিলেন, নাকি বড়ো বড়ো সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিলেন?  

তো, সর্বদা পত্রিকাওয়ালাদের অন্ধকার দিক নিয়ে লিখতে ভাল লাগে না। আমি অপেক্ষায় থাকি, এই নিয়ে এই পত্রিকায় সুদীর্ঘ লেখা ছাপা হবে। আমাদের দেশেরও কোন ধনকুবেরকে এমন পাগলামি করতে প্ররোচিত করা হবে। আমার অপেক্ষা আর ফুরায় না।
অবশেষে আজ (২৭ আগস্ট, ২০২০), অন্যআলোয় ফলাও করে ছাপানো হয়েছে, "বিশ্বের ছয় ধনীর অর্ধেক সম্পদ এখন গরিবের"। প্রথম আলো, বিশেষ করে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই এটার লেখক নাইর ইকবালকে।

সহায়ক লিংক: 
১. সম্পদের অর্ধেক দান করার ঘোষণা ৪০ ধনকুবেরের, : http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=24&date=2010-08-06
২. বিশ্বের ছয় ধনীর অর্ধেক সম্পদ এখন গরিবের: http://www.eprothomalo.com/index.php?opt=view&page=27&date=2010-08-27
৩. ঈশ্বরের বিশেষ সন্তানদের ইশকুল: http://tinyurl.com/2fs9j4p
৪. সভ্যতার কাকে বলে: http://www.ali-mahmed.com/2009/10/blog-post_9297.html 

Sunday, August 1, 2010

এটা কোন নগর, প্রথম আলো?

প্রথম আলো পত্রিকাটি এখন আসলে চালাচ্ছেন কে? মানুষটার জন্য আমার করুণা হয় কারণ তাঁর মগজটা কোথাও বন্ধক রাখতে বাধ্য হয়েছেন, বেচারা! দায়ে পড়ে তাঁকে এই কাজটা করতে হয়েছে, নইলে কে শখ করে বন্ধক রাখে, তাও মগজ নামের অতি প্রয়োজনীয় শরীরের একটা অংশ!
এটা আমার ধারণা না, আমি নিশ্চিত। আমার ধারণা ভুল হতে পারে, এমনটা হলে সেটা হবে একটা ভয়াবহ ঘটনা। তাহলে সেই মগজঅলা মানুষটা আমাদের মগজ ধোলাই করার চেষ্টা করছেন।

ছবিটার ক্যাপশন 'নগর ফ্যাশন'। আমার জানার খুব ইচ্ছা, এটা নগরের কোন এলাকার ফ্যাশন? কোথায় মেয়েরা এমন কাপড় পরা শুরু করেছে? নগরের এলাকাটা চাক্ষুষ করা আবশ্যক নইলে জানার অপূর্ণতা থেকে যাবে।
এমন না কোন যে পার্টিতে কেউ এমন পোশাক পরে চলে এসেছে। প্রথম আলো বলতে চাচ্ছে, এটা ফ্যাশনের পর্যায়ে চলে গেছে। এখন নিশ্চয়ই ধনী বাবা-মার বখা সন্তানরা শপিং মলগুলোতে গিয়ে খোঁজ করা শুরু করবে, প্রথম আলোর ওই কাপড়টা দেখান তো, আরে ওই যে...। জয় হোক প্রথম আলোর!

এই ছবির সঙ্গে যে কথাগুলো জুড়ে দেয়া হয়েছে তা আরও ভয়ংকর এবং আপত্তিকর:
"এই গরমে নগরবাসীর গায়ে উঠছে পাতলা পোশাক। পোশাকের আকারও ছোট হয়ে আসছে। সম্প্রতি মাদকবিরোধী সংগঠন 'আলো' আয়োজিত এক ফ্যাশন শোতে দেখা গেল তা-ই।"
খানিকটা হতাশ হলাম মাদকবিরোধী সংগঠনের নাম 'আলো' দেখে। এখানে কি ভুল ছাপা হয়েছে? 'প্রথম'টা বাদ পড়েছে? মাদকবিরোধী সংগঠনেও আজকাল ফ্যাশন শো-র আয়োজন হয়? ভাল-ভাল! তাও আবার এমন ফ্যাশন শো? এই ফ্যাশন শো তাহলে আমাদের সংস্কৃতির অংশ?
এটা সত্য, আমাদের দেশে এমন ফ্যাশন শো-র আয়োজন যে করা হয় না এমন না, হয়। কিন্তু ওই সব জায়গায় বার ওপেন থাকে, লিকারের ছড়াছড়ি ওই টাইপের ফ্যাশন শোতে নাচানাচি চলতে থাকে।

কিন্তু তাই বলে মাদকবিরোধী অনুষ্ঠানে? নাকি এখানেও ছাপার ভুল হয়েছে? আসলে হওয়ার কথা ছিল 'মাদক গ্রহন' অনুষ্ঠানে? ওখানে কারা কারা ছিলেন? যারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজক, স্পন্সর ট্রান্সটেক, প্রথম আলোর সম্পাদক এবং তার কর্মীবাহিনী? আচ্ছা, প্রথম আলোর পোষা মনোবিদ মোহিত কামাল ছিলেন না? থাকলে অবশ্য বেশ খানিকটা উত্তর পাওয়া যায়। এটাও হয়তো মনোচিকিৎসার একটা অংশ।

"এই গরমে নগরবাসীর গায়ে উঠছে পাতলা পোশাক। পোশাকের আকারও ছোট হয়ে আসছে।"
কতটা পাতলা? নগরবাসীর পোশাকের আকার কতটা ছোট হয়ে যাচ্ছে, ছবির মত? আমাদের দেশের মেয়েরা কোন রাস্তা দিয়ে এমন পোশাক পরে হাঁটছে? আমি সেই রাস্তার নাম জানতে চাই। প্লিজ, রাতে কমার্শিয়াল সেক্স ভলান্টিয়াররা যে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করে দুম করে সেই রাস্তার নাম বলে বসবেন না যেন।

আমি একটা লেখায় লিখেছিলাম, সাদাকে সাদা বলিব- কালোকে কালো- ঘুষখোরকে ঘুষখোর- রাজাকারকে রাজাকার। রাজাকারকে রাজাকার বলিব, ছড়াকার না [১]। এর সঙ্গে যুক্ত হবে, চুতিয়াকে চুতিয়া বলিব, নকিয়া না।

ছবি ঋণ; প্রথম আলো, ১ আগস্ট ২০১০

সহায়ক লিংক:
১. সাদাকে সাদা বলিব: http://www.ali-mahmed.com/2010/01/blog-post_18.html     

এরাই ঠিক করে দেন মানবতার সংজ্ঞা

আজ ক্রুদ্ধ হয়ে একজন মেইল করেছেন। কোন ওজর-আপত্তি শুনতে রাজি না। কেন এটা নিয়ে আমি লিখিনি এর স্পষ্ট জবাব চেয়েছেন।
কেউ একজন আমাকে বলেছিলেন, বিশেষ একটা পত্রিকার প্রতি নাকি আমার বিদ্বেষ আছে। আমি এই নিয়ে কু-তর্কে যাইনি তবে খানিকটা সতর্ক হয়েছিলাম। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, ঢের হয়েছে, বাপু, এই ময়লা নিয়ে আর ঘাঁটাঘাঁটি করব না। আপ্রাণ চেষ্টা থাকত এড়িয়ে যাওয়ার। 
আর কী মুশকিল, কেবল এদের নিয়ে লিখলে অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে লিখব কখন!

আমার স্পষ্ট মনে আছে, ২৪ তারিখের প্রথম আলোর একটা খবর পড়ে দুর্দান্ত ক্রোধে পত্রিকাটা ছুঁড়ে ফেলেছিলাম। নিতান্ত অবহেলায় এদের আঞ্চলিক পাতায় বিশাল বাংলায় ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধির বরাত দিয়ে খবরটা ছাপা হয়েছে:
শিরোনামটা হচ্ছে, "সীমান্ত থেকে পাঁচ শিশুকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ"। এদের মধ্যে একজনের বয়স সাত, আরেকজনের আট!...এ খবর লেখা পর্যন্ত অনুরোধ করার পরও বিএসএফ পতাকা বৈঠকে সাড়া দেয়নি। এদেরকে ছাড়া হয়নি।

আমার মন কি এটা আশা করে বসে ছিল এই বিষয়টা নিয়ে সম্পাদকীয় লেখা হবে? এই নির্বোধ ভাবনা বাড়াবাড়ি রকম আচরণ এটা বুঝি না এমন না। ২৪ জুলাইয়ের পর থেকে এই পত্রিকার সম্পাদকীয় দেখলেই এটা নিশ্চিত হওয়া যাবে কত বড় বড় সমস্যা নিয়ে এরা মাথা ঘামান, এখানে হতদরিদ্র পাঁচ শিশুকে নিয়ে লেখার অবকাশ কই!
১. ২৫ জুলাই: "পোশাকশ্রমিকের জীবন ও মৃত্যু, গণপরিবহনে নৈরাজ্য"।
২. ২৬ জুলাই: "ইউপি-পৌরসভা নির্বাচন, বোর্ডের বই জালিয়াতি।
৩. ২৭ জুলাই: "পবিত্র শবে বরাত, শেয়ারবাজারে বড় দরপতনে আতঙ্ক"।
৪. ২৯ জুলাই: "মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, বন্যার মৃদু পদধ্বনি"।
৫. ৩০ জুলাই: "পঞ্চম সংশোধনী মামলার রায়, সেশনজটের ব্যাধি"।
৬. ৩১ জুলাই: "পোশাকশিল্পের ন্যূনতম মজুরি, অননুমোদিত আবাসন প্রকল্প"।

বেশ, এটা না-হয় মেনে নিলাম কিন্তু আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না, আমাদের পাঁচটা শিশুকে ধরে নিয়ে গেছে, এটা কি অন্তত প্রথম পাতায় আসার মত সংবাদ না? আহা, প্রথম পাতায় জায়গা ছিল না বুঝি? ২৪ জুলাই প্রথম পাতার সংবাদগুলো একটু খতিয়ে দেখা যাক:
১. একজন কর্মকর্তা ঝরনা বেগমকে অস্ত্র হাতে যে পুলিশ মহোদয়গণ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছেন এই পৃথুল ছবির (সাড়ে ছয় ইঞ্চি বাই পাঁচ ইঞ্চি) প্রয়োজনটা কি? খানিকটা ছোট করলে সমস্যা কী ছিল! নাকি এই বিশাল ছবি না দেখলে আমরা বুঝে উঠতে পারতাম না কেমন করে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়, তাই না?
২. ফটিকছড়ির শীর্ষ সন্ত্রাসী সেয়াখত নিহত হওয়ার যে বিশদ বর্ণনা দেয়া হয়েছে এই খবর প্রায় সবটুকু প্রথম পাতাতেই পড়তে হবে, না?
৩. মির্জা ফখরুল কি বলেছেন এটা খুব জরুরি, ঠিক না?
৪. "বিশেষ সংসদীয় কমিটিতে যাবে না বিএনপি"। এটাও অতি জরুরি, নাকি?
৫. "প্রাণ জুড়ানো পাখার গ্রাম"। বেশ, মেনে নিলাম এটা জানাবার মত খবর। কিন্তু এর সঙ্গে যে ঢাউস ছবিটা (পাঁচ ইঞ্চি বাই সাড়ে তিন ইঞ্চি) ছাপানো হয়েছে এটা এমন বড়ো করে না ছাপালে আমরা বুঝতেই পারতাম না পাখা জিনিসটা কি? এটা  কেমন করে বানায়?
৬. "মহাখালিতে সাবেক নৌপ্রধানের বাসায় ডাকাতি"। এটা প্রথম পাতায় আসতে পারে কি না এই তর্কে আমি যাব না কারণ ডাকাতিটা কলিমুল্লা, ছলিমুল্লার বাসায় হয়নি। মহাখালিকে খুবই সুরক্ষিত এলাকা হিসাবে ধরা হয়। অনেকে এখানে থাকার জন্য হাঁ করে থাকেন। কিন্তু এই খবরটার সবটুকু আমাকে প্রথম পাতাতেই পড়তে হবে কেন? বাকী অংশটুকু অন্য পাতায় পড়লে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে, না?

ওই দিনেরই পেছনের পাতার প্রসঙ্গ নিয়ে আর আলোচনায় গেলাম না। "চোখ জুড়ানো অর্কিড", এটার যে ছবিটা ছাপা হয়েছে (সাড়ে ছয় বাই পাঁচ)। বড়ো মুখ খারাপ করতে ইচ্ছা করে। পত্রিকার বিশেষ বা...ছাল পাতাগুলো আছে কি করতে?
আর বিজ্ঞাপনের বিষয়ে আলোচনা করে লাভ নেই কারণ টাকা পেলে পত্রিকাওয়ালারা হেন কোন বিজ্ঞাপন নেই [১] যা ছাপে না! এমনিতে তথ্যের ফাঁকে ফাঁকে বিজ্ঞাপন না দিয়ে, বিজ্ঞাপনের ফাঁকে তথ্য দিলে আটকাচ্ছে কে?

তবুও এরপর থেকে আমি অপেক্ষা করি এই হতভাগা পাঁচ শিশুর কি হলো? ঠাকুরগাঁয়ের প্রতিনিধিকে সহায়তা করার জন্য ঢাকা অফিস থেকে লোকজন ছুটে যাবেন এটা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি না, যে এই আশায় আমি বসে ছিলাম। ঢাকা অফিসের লোকজন সহজে পেছনটা উত্তোলন করতে চান না এ তো আর নতুন কিছু না। কিন্তু প্রতিদিন অপেক্ষায় থাকি এই খবরের জন্য এই শিশুরা কি ফিরে আসতে পেরেছিল? ফলোআপ ছাপা হয়েছে কি, নাকি আমার চোখ এড়িয়ে গেছে? আমি এখনো জানি না।

আমি এও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করি, আমাদের দেশের তাবড় তাবড় কলাম লেখক মহোদয়গণ এই নিয়ে টুঁ-শব্দও করেননি। কেন? ফারুক চৌধুরীরা "আফগানিস্তান সমস্যার গোলকধাঁধা" নিয়ে কলম চালিয়ে মানবতার দন্ডটা ধরে রাখেন, না? নিজ দেশের দরিদ্র শিশুদের অন্য একটা দেশ ধরে নিয়ে গেলে গায়ে লাগে না, না? কারণ এই খবরগুলো আঞ্চলিক খবর, এই খবরগুলো কাভার করবেন, লিখবেন আঞ্চলিক প্রতিনিধি। বড় বড় মানুষদের বয়েই গেছে আঞ্চলিক খবরে চোখ বুলাতে।
সো কলড মুক্তচিন্তার ধারক-বাহক, এই সব পত্রিকা যারা চালান এরা কবে বুঝবেন কোন তথ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, মানবিক। হা মানবতা, যা আমাদের দেশে কেজি দরে বিক্রি হয়...।
আজ এই বাচ্চাগুলোর জায়গায় যদি কেবল একজন ইউনিফর্মধারী কেউ হতো গোটা দেশব্যাপি ঝড় বয়ে যেত। রাজনীতিবিদদের গলাবাজিতে গলা বসে যেত, আমাদের তথাকথিত সুশীলদের কলমের কালি শেষ হয়ে যেত।
আমাদের লিখিত সংবিধানে যেমন প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সমান অধিকার রাখা হয়েছে তেমনি অলিখিত 'মিডিয়া-সংবিধানে'ও প্রত্যেকের বেলায় সমান গুরুত্ব দেয়া হবে এটাই যথার্থ আচরণ, এর ব্যত্যয় হওয়ার কোন সুযোগ নাই। 

*২ আগস্ট, ২০১০: 
এই পাঁচ শিশুর পরে কি হলো এটা জানার জন্য প্রথম আলোর পুরনো একটা ডায়েরিতে দেয়া নাম্বারের সূত্র ধরে ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধির যে নাম্বার দেয়া আছে, ওটায় ফোন করি। ওই নাম্বারটা এখন আর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধির না। জনাব লতিফ নামের একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বিস্তারিত জানার জন্য ইউএনবিনিউজ ডট কমের কথা বলেন। সমস্যাটা কোথায় জানি না, এই ঠিকানায় বিজাতীয় এক সাইটের খোঁজ পেলাম। আমি আবারও ফোন করি, সমস্যার কথা বলি। তিনি সমাধান দিতে পারলেন না। তিনি বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডট কমে খোঁজ করতে বলেন। এখানেও খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হই।
ফোন করি প্রথম আলো অফিসে। বার্তা বিভাগের জনাব রুবেলের সঙ্গে কথা বলি। তিনিও এই তথ্যের বিষয়ে গুছিয়ে বলতে পারেননি। আমাকে সাড়ে চারটার পর চীফ রিপোর্টারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। সাড়ে চারটার পর অনেকবার চেষ্টায়ও চীফ রিপোর্টারের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।

অবশেষে ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধির জনাব মুজিবর রহমানের নাম্বার যোগাড় হয়। তিনি জানান, ২৭ তারিখে ফলোআপ ছাপা হয়েছে 'সারাদেশ' নামের আঞ্চলিক পাতায়। আমি তন্নতন্ন করেও খুঁজে পাই না। তিনি জানান, হয়তো নগর সংস্করণে না ছেপে অন্য কোন সংস্করণে ছাপা হয়েছে।
তো, তাঁর কাছে যেটা জানতে পারি, বিএসএফ এদের ফেরত দেয়নি। ওদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এরা বলার চেষ্টা করছে ৩জন ব্যতীত অন্যরা প্রাপ্তবয়স্ক। এ মাসের ৫ তারিখে এদেরকে কোর্টে তোলা হবে। এটা অবশ্য জনাব লতিফও জানিয়েছিলেন।
এখন অবশ্য বিবিসি বাংলার লিংকটা পেয়ে অনেকখানি আঁচ করা গেল [২]

সহায়ক লিংক:
১. সম্পাদক: http://www.ali-mahmed.com/2007/06/blog-post_7364.html
২. বিবিসি: http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2010/07/100725_tbbdindiaborder.shtml   

Wednesday, July 28, 2010

আবারও কুইজ

(আগের কুইজের [১] মতই এটারও পুরস্কার একই।)
এই ছবিটা একটা অসম্ভব দুর্ধর্ষ ছবি এটা বললেও কম বলা হয়! আমার মত অগাবগা কল্পনাও করতে পারি না এমন একটা অসাধারণ ছবি উঠাতে পারব। একটা ছবি উঠাতে কেমন দক্ষযজ্ঞ করতে হয় তার খানিকটা নমুনা এখানে পাওয়া যাবে [২]। দালি সাহেবের কান্ড দেখুন!

ছবিটা মেহেরপুর সদর থেকে তোলা হয়েছে সে না-হয় বুঝলুম কিন্তু এমন অসাধারণ ছবিটা উঠিয়েছে কে এই সম্বন্ধে কোন দিক-নির্দেশনা এখানে নাই। আজকের কুইজটা এটা নিয়েই। কে উঠিয়েছে ছবিটা?

ক. মতিউর রহমান স্বয়ং?
খ. প্রথম আলো অফিসের কোন চাপরাসি?
গ. এমন কোন ব্যক্তি যার নাম প্রথম আলো (ছদ্মনামে আছেন, নিজ নামে আত্মপ্রকাশ করতে চান না)?
ঘ. ছবির এই কাঠবিড়ালি ক্যামেরায় (কাঠবেড়ালিরা কোন জাতের ক্যামেরা ব্যবহার করে এটা আমার জানা নাই) অটো-টাইমিং দিয়ে নিজে নিজেই এই ছবিটা উঠিয়েছে?
ঙ. অলম্পাস, নাইকন, হাট্টিমাটিম নামের কোন একটা ক্যামেরা নিজে নিজেই এটা উঠিয়েছে এবং স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে প্রথম আলো অফিসে মেইল করেছে?
চ. গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন জায়গায় যেসব ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছে; এদের সঙ্গে প্রথম আলোর দহরম-মহরম থাকার কারণে ওখান থেকে ছবিটা সংগ্রহ করা হয়েছে?
ছ. এর কোনটাই না। প্রথম আলোর কোন একজন আলোকচিত্রি ছবিটা উঠিয়েছেন। 'প্রথম আলো তাঁকে টাকা দিচ্ছে, আবার তাঁর নামও দেবে'? প্রথম আলো এই নীতিতে বিশ্বাসী বলে তাঁর নামটা আসেনি?

*ছবি ঋণ: প্রথম আলো

সহায়ক লিংক:
১. কুইজ প্রতিযোগিতা: http://www.ali-mahmed.com/2010/07/blog-post_13.html 
২. দক্ষযজ্ঞ: http://www.ali-mahmed.com/2009/05/blog-post_6543.html

Tuesday, July 13, 2010

কুইজ প্রতিযোগিতা

পত্রিকাওয়ালা বিভিন্ন কুইজের আয়োজন করে থাকে। আমাদের যেহেতু ছাপার অক্ষরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস তাই তারা যা বলেন আমরা চোখ বুজে বিশ্বাস করি, অনুকরণ করি। পত্রিকার দেখাদেখি একটা কুইজের আয়োজন করলে খুব একটা দোষের হবে বলে মনে হয় না।
একটা পত্রিকার থাকে বেসুমার টাকা। তারপরও এরা কোন কুইজ প্রতিযোগিতায় ১০০ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করে। মন ভালো থাকলে ২০০ টাকা।

এঁদের তুলনায় আমি কিছুই না। আমি খুশি হতাম কুইজের পুরস্কার হিসাবে দুইটা বাদাম দিতে পারলে। কিন্তু ওপথ মাড়াচ্ছি না। কারণ এমনিতেই আমার দুর্নামের শেষ নাই বিধায় নতুন করে দুর্নাম কামাতে চাই না বলে! 
সঠিক উত্তরদাতাদের মধ্যে থেকে লটারির মাধ্যমে যিনি জিতবেন তিনি পাবেন নগদ ২০০ টাকা। যাদের নগদ টাকার প্রতি মোহ নাই তাঁদের জন্য অন্য অপশন আছে। আস্ত মুরগীর রোস্ট, কয়লার আঁচে ঝলসানো (এটার সমস্যা হচ্ছে, কষ্ট করে এসে খেয়ে যেতে হবে এবং এটাও কথা দিচ্ছি ওই আস্ত রোস্টে আমি ভাগ বসাব না। কেবল তাকিয়ে থাকব।)।
তো, হয়ে যাক একটা কুইজ প্রতিযোগিতা। কইনছেন দেহি...

এই ছবিতে তিন বালিকা এক পাশে, অন্য বালিকা অন্য পাশে। আলাদা। কেন? 
এখানে অনেকগুলো সূত্র দেয়া হয়েছে। এখান থেকেই বেছে নেয়া যাবে সঠিক উত্তরটা। কেউ যদি মনে করেন সঠিক উত্তরটা এখানে নাই তিনি ইচ্ছা করলে তাঁর সঠিক উত্তরটা এখানে যোগ করতে পারবেন।

ক. তিন বালিকারই কি হাতের ল্যাপটপটা বেশি দামি, একাকী বালিকাটার কম দামি?
খ. তিন বালিকারই হাতের ল্যাপটপ কি কম দামি, একাকী বালিকাটির বেশি দামি?
গ. ল্যাপটপ কেবল মেয়েরাই ব্যবহার করে। ভয়ে ভয়ে আছি, কোন দিন না দেখি মেয়েরা...ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছে। ল্যাপটপ কেবল মেয়েরাই ব্যবহার করে এটা বিস্মিত হওয়া কোন এক বালক ভুলে ফাঁকা জায়গায় চলে এসেছিল। তাকে কি ফটো-ব্লাস্টার দিয়ে উড়িয়ে দেয়া হয়েছে?
ঘ. তিন বালিকার নামের আদ্য-প্রথম অক্ষর কি একই?
ঙ. তিন বালিকার হাইহিল জুতার উচ্চতা কি একই?
চ. তিন বালিকা কি ভাল রকম বাঁকা হতে পেরেছে?
ছ. তিন বালিকার ফ্যাশন ডিজাইনার কি একজনই?
জ. নাকি ছবিতে বিশেষ কোন লোগো দৃশ্যমান হওয়া প্রয়োজন?

*ছবি ঋণ: প্রথম আলো 

Thursday, June 3, 2010

আমাগো ছাওয়াল ফিরা আসছে!

আমাদের মুসাকে নিয়ে আমরা উল্লাস করবই। এই মানুষটা এই দেশের প্রথম সন্তান যিনি আমাদের জন্য এমন একটা কাজ করে দেখিয়েছেন যা অন্যরা পারেনি। স্যালুট। কালের কন্ঠের মত দানব বানাবার কারখানা [১] কি বলল, না বলল তাতে আমাদের কিছুই যায় আসে না। সে প্রসঙ্গ থাকুক। 

আমি একটায় লেখা লিখেছিলাম, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসুক [১]। এসেছে-এসেছে, কী আনন্দ-কী আনন্দ! এই দেশের গর্ভ (টাইপে ভুল হয়েছে, পড়বেন গর্ব), আনিসুল হক সহি সালামতে দেশে ফিরে এসেছেন।

এই ছবিটায় আনিসুল হকের নাম না থাকলে আমার বুঝতে সমস্যা হতো কোনটা মুসা, কোন আনিসুল হক। কী পোশাকে, কী মাথার ফেট্টিতে, কী হাসিতে! 

ভাল কথা, মুসা ২ আঙ্গুল দেখালে আনিসুল হকের এটা কি উচিৎ না অন্তত দেড়টা আঙ্গুল দেখানো।

তাঁর ত্যাগও কী কম? কত বড়ো ঝুঁকি তিনি নিয়েছেন! একজন লেখক হওয়ার পরও তিনি আমাদের জন্য হাসিমুখে দাঁত বের করে চৌর্যবৃত্তি করেছেন [২]। 
কেবল করেনইনি, বমাল ধরা পরার পরও বিন্দুমাত্র বিব্রত হননি। কোথাও এখন পর্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে আমার জানা নাই। কেবল দায়সারা গোছের এটা লিখেই দায় সেরেছেন, "...ফোন আসতে লাগল ডয়েচে ভেলে, বিবিসি থেকে। তারপর তিনি পেলেন আমার ফোন।"  
বেমালুম ভুলে গেলেন তার এই লেখাটা, '...এটা ২৫ মে কাঠমান্ডু থেকে তিব্বতের বেসক্যাম্পের ফোনে মুসা ইব্রাহীমের সঙ্গে প্রথম কোন বাঙালির কথোপকথন। এবং প্রিয় পাঠক, এই ঐতিহাসিক কথোপকথনটা আপনি পড়ছেন, আপনিও কিন্তু ইতিহাসের সাক্ষী। ভবিষ্যতে নাতি-নাতনিদের এই গল্প আমরা করতে পারব। হা হা হা...'।" 

ওহ, আমি যে লিখলাম, বমাল ধরা পড়েছেন এই কথাটায় খানিকটা ভুল আছে। বমাল মানে হচ্ছে মাল সহ, ওয়েব সাইটের জন্য এটা সম্ভবত প্রযোজ্য হবে না। বমালের জায়গায় বলা যেতে পারে, 'ওমাল'।
তো, চুরির মত এতো বড়ো একটা ঝুঁকিই কেবল নেন নাই, তিনি যেভাবে মুসাকে বুকে আগলে নিয়ে এসেছেন, দাঁতসহ ফটোসেশন করেছেন এই জন্য আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি নইলে মুসা দেশে ফিরতে পারতেন কি না সন্দেহ।

আনিসুল হকের কী একেকটা লেখার যাদু! লিখেছিলেন, 
"প্রথম আলো ফুটছে। সূর্যের প্রথম রশ্মি এসে পড়ল এভারেস্টের চুড়ায়। ঠিক তখনই আমি এভারেস্টের মাথায়। আমার কী যে ভাল লাগল। এই আলো। এই আমার স্বপ্নপূরন। ২৩ মের প্রথম আলোকরশ্মি এভারেস্টের চুড়ায় আমাকে স্বাগত জানাল।"
কেবল তিনি দয়া করে এটা লিখেননি, এক ইয়েতিকে দেখলাম এভারেস্টের চুড়ায় বসে প্রথম আলো পত্রিকায় আনিসুল হকের লেখা গভীর মনোযোগের সঙ্গে পাঠ করছে। আমরা পাঠক আর খানিকটা নির্বোধ হলে তিনি এই জিনিসও প্রসব করতেন এতে কোন সন্দেহ নাই। 

আমি বিস্মিত, অবাক হলাম, প্রথম আলো পত্রিকাতেও মুসাকে নিয়ে আনিসুল হক আছেন। পত্রিকায় পড়লাম, মুসার সঙ্গে তার সহযোদ্ধা তিন শেরপা এসেছেন। আমি অনেক সুখি হতাম এখানে আনিসুল হকের চাঁদবদন দেখার চেয়ে মুসার সঙ্গে ওই তিন শেরপার ছবি দেখলে। এবং তাঁরা নাকি এই দেশে প্রথমবারের মত এসেছেন।

আচ্ছা, এই মানুষটার কি বিন্দুমাত্র লাজ নাই। এই মানুষটা তো কেবল একজন সাংবাদ কর্মীই না একজন লেখকও। অন্তত নিজের পত্রিকায় ফটোসেশনের বেলায় সরে গেলে কী সূর্য খানিকটা কি নীচে নেমে আসত! একটা মানুষ এতোটা নির্লজ্জ হয় কেমন করে?

*ছবি ঋণ: সুবীর কুমার, আমাদেরসময় 

সহায়ক লিংক:
১. দানব বানাবার কারখানা: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_28.html 
২. চৌর্যবৃত্তির নমুনা: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_27.html 
৩.ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসুক: http://www.ali-mahmed.com/2010/05/blog-post_29.html