অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণে বাধা দূর করার দাবি

অর্পিত সম্পত্তি আইনের বাস্তবায়ন ও প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়াকে একটি মহল জটিল থেকে জটিলতর করে তুলছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা সত্ত্বেও সরকারের ভেতরের একটি অংশের এ ধরনের কার্যক্রম বিষয়টিকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেলের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ করা হয়েছে।

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় বাস্তবায়নে গড়িমসি এবং প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সেলের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।
নয়টি সংগঠনের সমন্বয়ে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন জাতীয় নাগরিক সমন্বয় সেল গঠিত। এসব সংগঠন হলো আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, এএলআরডি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলন, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট-ব্লাস্ট, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ, নিজেরা করি ও এইচডিআরসি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, চলতি বছরের ১২ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অর্পিত সম্পত্তির ‘ক’ তালিকায় প্রকাশিত গেজেটে বাদ পড়া এবং ভুল হওয়া সম্পত্তির সংশোধনী গেজেটে প্রকাশ প্রসঙ্গে শীর্ষক একটি পরিপত্র গোপনে জারি করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে নতুন করে আবার বাদ পড়া তালিকার নামে এ নির্দেশনা জারি করা হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। অবিলম্বে ওই পরিপত্র বাতিলের দাবি জানানো হয়। পরিপত্র জারির সঙ্গে জড়িত অসাধু কর্মকর্তাদের তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে অপসারণের দাবি তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আইন মন্ত্রণালয় থেকে আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষের রিট আবেদনের নির্দেশনা বা অনুশাসন প্রত্যাহার করে সম্পত্তি অবমুক্ত করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন নেই বলে পরিপত্র জারি করতে হবে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আইন হওয়ার পর পাঁচ বছরেও ৭০ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। ভূমিতে প্রকৃত মালিকের মালিকানা নিশ্চিত হয়নি। তিনি বলেন, গোপনে পরিপত্র জারি করার মাধ্যমে বাতিল হওয়া তালিকাকে ছদ্মবেশে প্রস্তুত করার অপচেষ্টা হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছাকে ভূলুণ্ঠিত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে অমান্য করা হচ্ছে।
অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি কামাল লোহানী বলেন, প্রশাসনের ভেতরে গণবিরোধী মানুষগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে বারবার হোঁচট খেতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ সত্ত্বেও অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে আইন আইনের জায়গায় রয়ে গেছে। তেমন অগ্রগতি হচ্ছে না। একটি চিহ্নিত মহল এটি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে।