সোমবার

০৬ মে ২০২৪


২৩ বৈশাখ ১৪৩১,

২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

‘আসন্ন বাজেট নিয়ে জনমানুষের প্রত্যাশা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপ

অসুবিধাগ্রস্ত মানুষ বাজেটে কী পেল তা স্বচ্ছভাবে জানাতে হবে

ডেস্ক রিপোর্ট || বিজনেস ইনসাইডার

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ১৭ এপ্রিল ২০২২   আপডেট: ২০:৩৭, ১৭ এপ্রিল ২০২২
অসুবিধাগ্রস্ত মানুষ বাজেটে কী পেল তা স্বচ্ছভাবে জানাতে হবে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা (১৭ এপ্রিল): করোনা অতিমারী জাতীয় ও বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মাত্রায় ক্ষতির সৃষ্টি করেছে। সমগ্র বিশ্ব যখন এই ক্ষত কাটিয়ে উঠছিল, ঠিক তখনই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাংলাদেশও সেই অনিশ্চয়তার ফল ভোগ করছে। বিশেষত, বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় পিছিয়ে পড়া মানুষ নতুন করে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এ কারণে, অসুবিধাগ্রস্ত মানুষ বাজেটে কী পেল তা স্বচ্ছভাবে জানাতে হবে।

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ আজ রবিবার ‘আসন্ন বাজেট নিয়ে জনমানুষের প্রত্যাশা’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপের আলোচকরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 

ভার্চুয়াল সংলাপে পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন। সংলাপে আসন্ন বাজেট থেকে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশা কী এবং তারা কোন্ ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন– সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত হয়।

সংলাপের আলোচকরা মনে করেন, আসন্ন বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে দিক-নির্দেশনা থাকা জরুরি। এ ছাড়াও, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান খাতে অতিমারীর ফলে কী কী ক্ষতি হয়েছে এবং কীভাবে সেটা পুষিয়ে নেওয়া যায় সে বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া দরকার। উদ্ভূত সমস্যাগুলো নিরসনে ব্যাপক আকারে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ প্রয়োজন। এবং সেই সঙ্গে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে আরও সুষ্ঠুভাবে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় নিয়ে আসা উচিত।

সংলাপে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক  ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য তার সমাপনী বক্তব্যে বলেন, বাজেটে জনসাধারণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা উচিত। তাই বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পূর্বেই জনসাধারণের জন্যে একটি খসড়া নীতিমালা উন্মুক্ত করে দেওয়া উচিত, যাতে জনগণ সরাসরি তাদের প্রত্যাশাগুলো ব্যক্ত করতে পারেন। অর্থনীতির চাকা সচল করতে তাই একটি সম্প্রসারণমূলক মুদ্রা নীতি প্রণয়ন অতীব জরুরি। তা ছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বিবেচনা করে জনগণকে, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে, সরাসরি বিভিন্ন প্রণোদনা, যেমন– অর্থনৈতিক সুরক্ষা, খাদ্য প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আর এ জন্যে পূর্বের সকল প্রণোদনা কর্মসূচির পরিবীক্ষণ প্রয়োজন।

সেন্টার ফর সার্ভিসেস এন্ড ইনফরমেশন অন ডিজেবিলিটির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলম বলেন, প্রতিবন্ধীদের বাজেট বলতে শুধুমাত্র সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়য়ের বাজেটকে বুঝায়। অন্যদিকে প্রতিবন্ধী মানুষদের সামাজিক সুরক্ষা বেষ্টনীর আওতায় মাসিক মাত্র ৭৫০ টাকা ভাতা দেওয়া হয়, যা দৈনিক হিসাবে ২৫ টাকা। এটা সহজেই অনুমেয়, ভাতার পরিমাণ বাড়ানো উচিত। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে, প্রতি বছর ভাতাপ্রাপ্যদের সংখ্যা বাড়লেও, ভাতার পরিমাণ বাড়ে না।

ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এর টেকনিক্যাল প্রোগ্রামের পরিচালক টনি মাইকেল গোমেজ বলেন, অতিমারীর জন্য শিশুদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শহরকেন্দ্রিক বিদ্যালয়গুলো চালু থাকলেও, গ্রামাঞ্চলে বা দুর্গম জায়গাগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিভিন্ন কারণে যারা ঝরে পরেছে, তাদের স্কুলে ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই এই সমস্যাগুলোর নিরসনে শিশু বাজেট নতুন আঙ্গিকে প্রণয়ন করা দরকার।

কর্ডএইড-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শাকিব নবী বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক বর্তমানে অনানুষ্ঠানিকভাবে কৃষি কাজের সাথে জড়িত। ফলে দেখা যাচ্ছে যে, তারা সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কৃষি খাতের সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।

অক্সফাম ইন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. মোস্তফা আলী বলেন, কৃষি নিয়ে সরকারের আরও পরিকল্পিত নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত। অঞ্চলভেদে প্রয়োজনীয় কৃষি কর্মকর্তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। তাই এসব সমাধান করতে কৃষি সংক্রান্ত সব মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

এদিকে, সোশ্যালিস্ট লেবার ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব বুলবুল পরিবহণ শ্রমিকদের দীর্ঘ কর্মঘণ্টার ওপর আলোকপাত করে বলেন, পেশাগত কারণে দীর্ঘসময় কাজে নিয়োজিত থাকায় পরিবহণ শ্রমিকদের খুব অল্প বয়সেই কর্মক্ষমতা হারাতে হয়। তা ছাড়া নানাধরনের রোগ-ব্যাধিতেও তাদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। এ জন্যে আসন্ন বাজেটে শ্রমিকদের জন্যে ভর্তুকি মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া, পরিবহণ শ্রমিকদের দুর্ঘটনা বীমার আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। সংবাদ-বিজ্ঞপ্তি।

Walton

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়