ডেঙ্গু পরিস্থিতি : ছুটির দিনে রোগী ও মৃত্যু দুইই কম

আগের সংবাদ

কদর বেড়েছে বোমাবাজদের : ২০১৪-১৫ সালের স্টাইলে আগুন-বোমা, পুরনো সন্ত্রাসীরা সক্রিয়, মাঠে নতুন বোমাবাজ

পরের সংবাদ

অবাধ আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করার আহ্বান : সিপিডির ‘১৪তম দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক সম্মেলন’

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পরস্পর ‘আস্থাহীনতা’ থেকে বেরিয়ে এসে অবাধ আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। তিনি বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অবাধ আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করার মাধ্যমে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিতের বিশাল সুযোগ রয়েছে। কিন্তু পারস্পরিক আস্থাহীনতার কারণে সেই সুযোগ কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্যের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো শুল্ক ও অশুল্ক বাধা। এসব বাধা দূর করে এক দেশ অন্য দেশে বিনিয়োগ এবং সীমান্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করতে পারলে ‘আসিয়ান’ এর মতো এ অঞ্চলও শক্তিশালী একটি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
ধানমন্ডিস্থ নিজস্ব কার্যালয়ে গতকাল শনিবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত দুদিনব্যাপী ‘১৪তম দক্ষিণ এশিয়া অর্থনৈতিক সম্মেলন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিশেষ অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার গভর্নর পি নন্দলাল বিরাসিংহ, নেপালের সাবেক গভর্নর ও অর্থমন্ত্রী যুবরাজ খাতিবাদা, পাকিস্তানের সাবেক গভর্নর ইশরাত হোসাইন এবং ভারতের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘আরআইএস’ এর মহাপরিচালক সচিন চক্রভেদিসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, মুক্তবাণিজ্যের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সমৃদ্ধির জন্য সব দেশকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সব দেশের সুবিধা হয়, তেমন নীতি গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেকটি দেশের অর্থনীতির একটা নিজস্ব দিক থাকে। সংশ্লিষ্ট দেশটির জন্য সেই সুবিধা নিশ্চিত করতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ধারাবাহিক বৈঠক করতে হবে। সব দেশের রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ এবং সুধী সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক করে সবার সুবিধা নিশ্চিত হয় এই রকম কৌশল বের করতে হবে। এক দেশের পরিবহন যাতে অবাধে অন্য দেশে যেতে পারে, এক দেশের শ্রমিক যাতে অন্য দেশে কাজ করার সুযোগ পায় এবং অবাধ সীমান্ত নিশ্চিত হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এভাবেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আসিয়ান বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট গড়ে তোলা সম্ভব। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করতে ভারতকেই এগিয়ে আসতে হবে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নের বৈশ্বিক প্রতিশ্রæতি টেকসই উন্নয়নের (এসডিজি) লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি পূরণ করতে হলে পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নে ব্যাপক বিনিয়োগ দরকার। এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অবাধ বিনিয়োগ নীতি গ্রহণের মাধ্যমে একটি ‘ডায়ানামিক সাউথ এশিয়া’ গড়া সম্ভব।
গত দেড় দশকে বাংলাদেশের অগ্রগতির গল্প তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা দারিদ্র্য বিমোচনকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। দারিদ্র্যের হার এখন ৪০ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে নেমে এসেছে। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বানানোই আমাদের পরবর্তী টার্গেট।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি বিশ্বের মোট অর্থনীতির ৮ শতাংশ। আমাদের প্রতিটি সীমান্তে অশেষ সুযোগ থাকলেও আমরা সেই সুযোগ নিতে পারছি না। অবিশ্বাসের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে পারলে এ অঞ্চলে অশেষ অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।
আঞ্চলিক উন্নয়নের কাজের গতিধারার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আকাক্সিক্ষত বিষয় হচ্ছে পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন। আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। অথচ নেপালে পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর বিশাল সুযোগ আছে। দক্ষিণ এশিয়াকে অর্থনৈতিক জোট করা সম্ভব হলে নেপালে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সব দেশই লাভবান হতে পারে।
সা¤প্রতিক সময়ে সার্কভুক্ত দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে পাওয়া আর্থিক সহায়তায় শ্রীলঙ্কা ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে বলে মন্তব্য করে দ্বীপদেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পি নন্দলাল বীরাসিংহে বলেন, শ্রীলঙ্কাকে যে সহায়তা দেয়া হয়েছিল তা দেশটির আর্থ-সামাজিক সংকট কাটাতে বেশ সহায়ক হয়েছিল। এ ধরনের আর্থিক সহায়তা শুধু যে স্বল্পমেয়াদে স্বস্তি দিয়েছে তা নয়, এটি দেশটির অবকাঠামোগত দুর্বলতা কাটাতে ও সামগ্রিক উৎপাদন সক্ষমতা বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়