Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কমিশন নখদন্তহীন মেনে নিয়েই যাদবপুরে হাজির সপার্ষদ সুনন্দা

রাজ্য মহিলা কমিশন শান্তিনিকেতনের কলাভবনে ছাত্রী-নিগ্রহ নিয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছিল বিশ্বভারতীতে না-গিয়েই। তবে যাদবপুরের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ সম্বন্ধে খোঁজখবর নিতে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় রাজ্য মহিলা কমিশনের চার সদস্যের এক প্রতিনিধিদল। তাদের কাছেও ওই ছাত্রী লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন বলে মহিলা কমিশনের দাবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৫৬
Share: Save:

রাজ্য মহিলা কমিশন শান্তিনিকেতনের কলাভবনে ছাত্রী-নিগ্রহ নিয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছিল বিশ্বভারতীতে না-গিয়েই। তবে যাদবপুরের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ সম্বন্ধে খোঁজখবর নিতে বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় রাজ্য মহিলা কমিশনের চার সদস্যের এক প্রতিনিধিদল। তাদের কাছেও ওই ছাত্রী লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন বলে মহিলা কমিশনের দাবি।

যদিও এই ধরনের খোঁজখবরের আদৌ কোনও প্রভাব আছে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সভানেত্রী সুনন্দা মুখোপাধ্যায় নিজেই। তাঁর মতে, এই কমিশন নখদন্তহীন। তিনি বলেন, “প্রথম থেকেই কমিশনের গঠনে সমস্যা আছে। আমরা অনেক কিছুই করতে পারি না। কমিশন নখদন্তহীন।”

প্রভাব নিয়ে সংশয় থাকলেও অভিযোগের তদন্তে খামতি রাখেননি মহিলা কমিশনের সদস্যারা। অন্তত যাদবপুরের ক্ষেত্রে। সুনন্দাদেবী নিজে তো ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেনই। তিনি ছাড়াও এ দিনের প্রতিনিধিদলে ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ কমিশনের অন্য দুই সদস্যা। তাঁরা জানান, ওই ছাত্রী অভিযোগপত্রে লিখেছেন, ২৮ অগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শৌচাগার বন্ধ থাকায় তিনি একটি গাছের আড়ালে যান। সেই সময়েই কয়েক জন ছাত্র তাঁকে জোর করে একটি হস্টেলে ধরে নিয়ে যায়। হস্টেলের সুপারের সামনে গোটা ঘটনা ঘটলেও তিনি কোনও প্রতিবাদ করেননি বলে ওই ছাত্রীর অভিযোগ।

এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ওই হস্টেলের সুপারের সঙ্গে কথা বলেন মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। কমিশনের দাবি, ওই সুপার তাঁদের জানিয়েছেন, মূল অভিযুক্তকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ছাত্রটির নাম-ঠিকানাও লিখিয়ে নেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী জানান, ছাত্রীর অভিযোগের তদন্ত করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি বা আইসিসি। তাই এখন এই বিষয়ে মুখ খোলা ঠিক হবে না। আর রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষ বলেন, “মহিলা কমিশন ওই ঘটনার তদন্ত করতে চাইলে করুক না। কোনও আপত্তি তো নেই!”

তবে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে, বিশেষত হস্টেলগুলিতে নজরদারি বাড়ানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে বলে এ দিন জানান উপাচার্য। এ ব্যাপারে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন। এ ক্ষেত্রে শুধু নিরাপত্তারক্ষীদের উপরে নির্ভর না-করে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রদের নিয়ে বিশেষ দল তৈরি করা হতে পারে বলেও জানান অভিজিৎবাবু। ওই দল এক-এক দিন এক-এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হস্টেল ঘুরে পরিস্থিতি দেখবে।

গত ২৮ অগস্ট ফেস্ট চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হস্টেলের ঘরে বন্ধ করে এক দল ছাত্র শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হস্টেলে নিরাপত্তা বাড়াতে বলেছেন কর্তৃপক্ষকে। বৃহস্পতিবার একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, “উপাচার্যকে বলেছি, হস্টেলগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হোক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE