শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মৌখিক সম্মতিতে বোনের সম্পত্তি দখল করলে হবে জেল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ মার্চ ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

মৌখিক সম্মতিতে বোনের সম্পত্তি দখল করলে হবে জেল

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, উত্তরাধিকার আইনের ক্ষেত্রে নারীদের বঞ্চিত করা হয়। ভাইদের টেনডেনসি আছে বোনদের বঞ্চিত করে জমি নিয়ে নেওয়া। এটা একটা অপরাধ। এটা যদি কেউ বলে আমার বোন মৌখিকভাবে আমাকে দিয়েছে, তাও মাফ নাই। ওই অপরাধে তাকে জেলে ঢুকতে হবে, সাজা তাকে পেতে হবে। এটা ভূমি অপরাধ আইনে আসছে।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে মহাখালীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে নীতি সংলাপ ‘ভূমি ব্যবস্থাপনায় সাম্প্রতিক উদ্যোগ ও নাগরিক অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  এ সভার আয়োজন করে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম।


বিজ্ঞাপন


সভায় নারী প্রতিনিধিরা অভিযোগ জানান, উত্তরাধিকার আইন নারীদের জন্য বৈষম্যমূলক ও নারীরা নানা কায়দায় পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়। ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা, নতুন ভূমি আইন ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ডিজিটালাইজেশন নিয়েও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা প্রশ্ন তোলেন।

উত্তরাধিকার আইনে অনেক বৈষম্য আছে এমন দাবি করে রিসার্স ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের প্রতিনিধি সুরাইয়া বেগম বলেন, তারপরও যতটুকু প্রাপ্য নারী সেটা পায় না। ভূমি মন্ত্রণালয় যখন ডিজিটালাইজেশনের কথা ভাবছে। উত্তরাধিকার আইনে নারী যখন সম্পত্তির অধিকারী হন, অটোমেটিক্যালি তিনি সেটা হবে কি না এমন কোনো সিস্টেম হবে কিনা এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব জানান, নদীভাঙনের শিকার মানুষের জন্য নতুন আইনে বিধান রাখা হয়েছে।

ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিকদের জমির ব্যাপারে ও সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নদীভাঙন সংক্রান্ত ভূমি ব্যবহার ও মালিকানা আইনে সিকস্তি, পয়স্তিরে একটা চ্যাপ্টার আছে। কিছু জিনিস আইনে আসবে, পুরো প্রসেসটা আমরা বিধিতে নিয়ে আসবো। ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিকদের ৯৭ ধারার ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। ১৬টা জেলার ব্যাপারে একট সার্কুলার দেব।


বিজ্ঞাপন


ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, মানুষের চাহিদা বাড়ছে। ভূমির দাম বাড়ছে। দামের কারণে মাটি হয়েছে সোনা। এটার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। শান্তিপূর্ণ ও ঝামেলামুক্তভাবে জমি পরের প্রজন্মের কাছে যেন দিয়ে যেতে পারে সেটা মানুষ চায়। এখানে যে সব কাজ করছি চেষ্টা করছি সেটাকে সাসটেইনেবল ও ক্যাপাসিটি বিল্ডিং করতে।

তিনি বলেন, প্রত্যেকটা জিনিস ধরে ধরে করছি। সর্বশেষ হাটবাজার সংশোধন আইনকে যুগোপযোগী করার চেষ্টা করছি। সামনে ল্যান্ড ক্রাইম অ্যাক্ট, এখানে প্রধানমন্ত্রীর স্ট্রং নির্দেশনা আছে যে তিন ফসলি জমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা করা যাবে না। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে আসা চিঠিতে বলা হয়েছে তিন ফসলি জমির ক্ষেত্রে যাতে কোনো আপস না করা হয়। হ্যাঁ, সরকারি কোনো কাজে…প্রাইভেট সেক্টরে আমরা এনকারেজ করবো অনলি ম্যাকানাইজ ফার্মিংয়ের ক্ষেত্রে। কারণ আমাদের জমি কমে আসছে। আমরা ভালো সিড নিয়ে এসেছি। কৃষিতে তো একটা বিপ্লব হয়ে গেছে এই সরকারের আমলে। প্রাইভেট সেক্টরকে আমরা বলছি, আপনারা যদি ম্যাকানাইজ ফার্মিংয়ে ইনভেস্ট করেন, ভালো করে তিন ফসলে ফারমিং করেন। এখানে আমাদের ফুড সেফটি নেট কিন্তু বাড়বে। এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ডিজিটাল ডিভাইসের কারণে ভূমি সংক্রান্ত কাজ ডিজিটাল হলেও জনগণ এর সুফল পায় না উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইখতেখারুজ্জামান বলেন, জনগণকে বঞ্চিত করার জন্য একটি শ্রেণি গড়ে ওঠে। যেটি আমরা মাঠ পর্যায়ে দেখেছি। প্রায় অর্ধেকের বেশি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কারণে সেবাগ্রহীতারা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। আরও বক্তব্য রাখেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।

/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর