জাতীয়

ঢাকার বায়ুদূষণের নেপথ্যে ইটভাটা ও গা‌ড়ির ধোঁয়া

ঢাকা শহরের আশপাশের ইটভাটার ধোঁয়া, উন্মুক্ত নির্মাণকাজ এবং গা‌ড়ির ধোঁয়া রাজধানীতে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ। এ ছাড়াও অতি‌রিক্ত পলিথিনের ব্যবহার, পা‌নি ও সফট ড্রিং‌কসের খা‌লি বোতল প‌রি‌বেশ‌কে দূষণ কর‌ছে।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে বায়ু ও প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক সেমিনারে উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারের প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। সে‌মিনা‌রে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক সৈয়দ ইউসুফ সাদাত। 

এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় বাংলাদেশে শিল্পায়ন খুব বড় আকারে না হ‌লেও এখা‌নে বায়ুদূষণ বে‌শি। উন্নত অনেক দেশে বড় আকারের শিল্পায়ন হলেও দূষণ অনেক কম। তাই বায়ুদূষণের জন্য শিল্পায়নকে দায়ী করা যা‌বে না।

তিনি বলেন, ঢাকায় বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হচ্ছে শহরের আশপাশের ইটের ভাটা। রাজধানীর বায়ুদূষণের জন্য ঢাকা শহরের আশপাশের ইটভাটা সবচেয়ে বেশি দায়ী। ইটের ভাটার কারণে আকাশে দূষণ ছড়িয়ে যাচ্ছে। আর উন্মুক্তভাবে নির্মাণকাজ করার কার‌ণেও বায়ুদূষণ হ‌চ্ছে।

অপর‌দি‌কে, প্রধান অতিথির বক্ত‌ব্যে বায়ু ও প্লা‌স্টিক দূষ‌ণের বিষ‌য়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন, ডিএন‌সি‌সি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

মেয়র বলেন, আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে যেতে না পারলে দূষণ আটকানো যাবে না। শহরে বাইরে দেখা যায় রাস্তার পাশে বর্জ্যের স্তূপ। ওখানে তো বর্জ্য রাখার কথা নয়। আরেক‌টি হচ্ছে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা। খাল-বিল বন্ধ করে রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে। এক সময় ব্রিজ ছিল, রাস্তার সুবিধার জন্য কালভার্ট করে চিরদিনের জন্য নৌ-চলাচল বন্ধ করে দেওয়া ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটাই বাস্তবতা। কাউকে দোষারোপ করে লাভ নেই। পার্টনারশিপের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, বায়ুদূষ‌ণের ৫৬ শতাংশ কারণ ইটভাটা, রোড ডাস্ট ১৮ শতাংশ, যানবাহ‌নের ধোঁয়া ১০ শতাংশ। প্রতি‌দিন ৪৫ হাজার টন বর্জ্য রাজধানী সৃ‌ষ্টি হয়। যার ১৫ শতাংশই হ‌চ্ছে প্লাস্টিক ও প্লাস্টিক পণ্য।

মেয়র আতিক ব‌লেন, আমা‌দের শহ‌রের গুলশান, বনানী, নি‌কেতন, বা‌রিধারার লে‌কে ময়লা আর মশার চাষ হ‌চ্ছে। সেখা‌নে আমরা মাছ চাষ কর‌তে চাই। সেজন্য সক‌লের সহ‌যো‌গিতা জরু‌রি। আমরা পরবর্তী প্রজ‌ন্মের জন্য দেশটা‌কে বাস‌যোগ্য ক‌রে রে‌খে যে‌তে চাই। সরকা‌রি-বেসরকা‌রি, ব্য‌ক্তি সবার সমন্বয় ছাড়া এটা সম্ভব নয়। 

সিপি‌ডির নির্বাহী প‌রিচালক ড. ফাহ‌মিদা খাতু‌নের সঞ্চালনায় সে‌মিনা‌রে উপ‌স্থিত ছিলেন, নি‌পি‌ডির রিসার্চ ফে‌লো সৈয়দ ইউসুফ সাদাত, ডিএস‌কের নির্বাহী প‌রিচালক ড. দিবা‌লোক সিংহা, ইউনিলিভারের সিইও এবং ব্যবস্থাপনা প‌রিচালক জা‌ভেদ আকতার, গা‌র্বেজম্যা‌নের সিইও ফা‌হিম উদ্দিন শুভ, এয়ার কোয়া‌লি‌টি এক্সপার্ট মো. মাসুদ রানা প্রমুখ।