সিপিডির আলোচনা সভা

বায়ুদূষণে দুই দশকে মৃত্যু বেড়েছে ৯ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে গতকাল ‘সবুজ শহর উদ্যোগ’ শীর্ষক আলোচনায় কথা বলেন বক্তারা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

২০ বছরে বায়ুদূষণজনিত রোগবালাইয়ের কারণে মৃত্যু শতাংশ বেড়েছে। বায়ুদূষণে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। ১৫ বছরে প্লাস্টিক দূষণও বেড়েছে দ্বিগুণ। ফলে ভয়াবহ স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে শহরাঞ্চলের মানুষ।

গতকাল রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারেসবুজ শহর উদ্যোগশীর্ষক আলোচনায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) তথ্য তুলে ধরে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শিল্প বণিক সমিতি বা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক . ফাহমিদা খাতুন, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া মানদণ্ডের চেয়ে বাংলাদেশে বায়ুদূষণ ১৫ গুণ বেশি। ২০২০-২১ সালে বাংলাদেশ বায়ুদূষণে এক নম্বর স্থানে চলে এসেছিল। বাংলাদেশের অন্তত এক কোটি মানুষ বায়ুদূষণজনিত সমস্যার শিকার। ২০০৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে দেশে যানবাহনের সংখ্যা ২৮৩ শতাংশ বৃদ্ধি, নির্মাণসামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রাখা বায়ুদূষণের বড় কারণগুলোর অন্যতম। বায়ুদূষণজনিত কারণে গত ২০ বছরে মৃত্যুহার বেড়েছে শতাংশ। প্রতি বছর একজন ব্যক্তিকে বায়ুদূষণজনিত রোগের চিকিৎসার জন্য হাজার ৩৩৪ টাকা খরচ করতে হয়।

অনুষ্ঠানে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে বলা হয়, ২০১০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে প্লাস্টিকের মিসম্যানেজমেন্টের দিক থেকে শীর্ষ ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। মাছসহ বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে প্লাস্টিকের উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রাণিজ খাদ্যগ্রহণের মাধ্যমে ক্ষতিকর এসব প্লাস্টিক মানবদেহে প্রবেশ করছে প্রতিনিয়ত।

. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য গোটা বিশ্বেই ৭৫ শতাংশ দায়ী শহরাঞ্চল এবং শহরাঞ্চল থেকে সৃষ্ট ক্ষতির পরিমাণ জিডিপিতে ৪৪ শতাংশ। এসব সমস্যা বাংলাদেশেও রয়েছে। শহরাঞ্চলে আরো একটি বড় সমস্যা প্লাস্টিক বর্জ্য। ২০০৫ সালে শহরাঞ্চলে হার ছিল তিন কেজি, যা ২০২০ সালে এসে দেখা যায় তিন গুণ বেড়ে নয় কেজি হয়েছে। সিঙ্গেল ইউজড প্লাস্টিকের সবচেয়ে বেশি অপব্যবহার লক্ষ করা যাচ্ছে। যেটি ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি করছে।

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকার বায়ুর মান অত্যন্ত খারাপ। বাতাসের মান উন্নয়নে ইটভাটা বন্ধ করতে হবে। রাজধানীতে যানজট বন্ধ করতে হলে এবং গাড়ি থেকে বায়ুদূষণ কমাতে স্কুলবাস চালুর বিকল্প নেই। এছাড়া যত্রতত্র নির্মাণসামগ্রী রাখা পুরনো ভবন ভাঙার সময়ও বায়ুদূষণ হচ্ছে। কেউ এটা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বায়ুদূষণের জন্য শিল্প-কারখানা নয়, ইটভাটা এবং যানবাহনের ধোঁয়া বেশি দায়ী। নির্মাণসামগ্রী উন্মুক্ত স্থানে রাখার কারণেও বায়ুদূষণ হচ্ছে। বায়ু প্লাস্টিকের দূষণ বন্ধে সঠিক নীতি গ্রহণের পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন