হলুদের স্নিগ্ধ সাজ পাওয়া যাবে ২০ ধাপে

হলুদের দিনে দেশীয় ‘রূপ’ চান অধিকাংশ কনে। তবে স্নিগ্ধতা যেন অনেকটাই আবশ্যক এই দিনের সাজে

হলুৃদের অনুষঠানে কনে সাজতে পারে এভাবেমডেল: অর্পিতা, ছবি: কবির হোসেন

হলদে শাড়ি, কাচের চুড়ি আর ফুলের গয়না—হলুদসন্ধ্যায় এটাই কনের চিরায়ত সাজ। শাড়ি আজও সমাদৃত। হলুদ, কমলা, বাসন্তী ছাড়াও সবুজ বা ম্যাজেন্টার মতো উজ্জ্বল রঙে সাজছেন এখনকার কনেরা। একাধিক রঙের সমন্বয়ও থাকে শাড়িতে।

হলুদের আয়োজনেও এসেছে ভিন্নতা। যুক্ত হয়েছে আনন্দের নানা উপকরণ। লম্বা সময় ধরে চলে নানা অনুষ্ঠান। এতটা লম্বা সময় প্রাকৃতিক ফুল সতেজ থাকে না। কনের সাজে তাই কৃত্রিম ফুল জনপ্রিয় হয়েছে। এ দিনটাতে দেশীয় ‘রূপ’ চান অধিকাংশ কনে।

কনে আর বর গায়েহলুদের পোশাকের রং হতে পারে হলুদ
ছবি: কবির হোসেন

হলুদের আয়োজনে হালকা নকশার দেশজ শাড়ি, ফুল ও মাটির গয়নাতেই বাঙালি কনে অনন্য। টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার মনিরা এমদাদ বলেন, তাঁত, মসলিন কিংবা হাফ সিল্ক হতে পারে কনের গায়েহলুদের শাড়ির উপকরণ। ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়িও পরা যায়। ব্লক, টাইডাই বা হাতের কাজ করা শাড়িতেও এদিন কনেকে দারুণ মানাবে। ফুলেল আয়োজনে আরও একটু বৈচিত্র্য আনতে ফুলেল মোটিফের শাড়িও বেছে নেওয়া যায়। মৌসুমি ফুল থাকতে পারে কনের পোশাকে। এই যেমন স্নিগ্ধ শিউলি ফুল নকশা হয়ে ফুটে উঠতে পারে কনের শাড়িতে।

২০ ধাপের শুরু–শেষ

২০ ধাপে কীভাবে হলুদের সাজ নিবেন, জানালেন বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের রূপবিশেষজ্ঞ শারমিন কচি।

ধাপ ১: মুখ ধুয়ে নিন ত্বক উপযোগী পরিষ্কারক দিয়ে।

ধাপ ২: টোনার ব্যবহার করুন।

ধাপ ৩: ময়েশ্চারাইজার দিন।

ধাপ ৪: দুই-তিন মিনিট পর ত্বক বুঝে প্রাইমার লাগান। মিশ্র ত্বকের জন্য সিলিকন জেল আছে, এমন প্রাইমার ভালো। প্রাইমার ত্বকে মিশে যেতে দুই-পাঁচ মিনিট লাগে। এই সময়টাতে চোখ সাজাতে পারেন।

ধাপ ৫: চোখের নিচের অংশে টেপ লাগিয়ে নিন, যাতে সাজের গুঁড়া লেগে না যায়। পাউডার হতে পারে টেপের বিকল্প।

ধাপ ৬: বাদামি রঙে ভ্রু এঁকে নিন।

ধাপ ৭: চোখের খাঁজে (ক্রিজ) বাদামি বেজ দিন। চোখের জন্য বাদামি রঙের কোনো শেড কিংবা পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রঙের আইশ্যাডো বেছে নিন।

ধাপ ৮: হাইলাইটার প্রয়োগ করুন।

ধাপ ৯: গ্লিটার ব্যবহার করতে পারেন।

ধাপ ১০: কৃত্রিম পাপড়ি লাগান।

চুল খোলা রাখতে পারেন, সামান্য টুইস্ট করে
ছবি: কবির হোসেন

ধাপ ১১: চোখের আকার বড় দেখাতে চাইলে সাদা, আর ছোট দেখাতে চাইলে কালো রঙে চোখের রেখা (ওয়াটার লাইন) আঁকুন। এই রেখার নিচে মানানসই কোনো রং ব্লেন্ড করে নিন।

ধাপ ১২: টেপ খুলে ফেলুন। পাউডারের বাড়তি গুঁড়া ব্রাশ দিয়ে সরিয়ে ফেলুন।

ধাপ ১৩: ত্বকের রং অনুযায়ী ফাউন্ডেশন বেজ করুন। দাগছোপ থাকলে কালার কারেক্টর প্রয়োগ করতে পারেন।

ধাপ ১৪: প্রয়োজনমতো কনসিলার লাগিয়ে নিন।

ধাপ ১৫: কনট্যুর করতে পারেন।

ধাপ ১৬: স্বচ্ছ পাউডার সেট করে নিন।

ধাপ ১৭: ব্লাশ অন দিন।

ধাপ১৮: হাইলাইটার লাগিয়ে নিন।

ধাপ ১৯: পছন্দের রঙে ঠোঁট রাঙিয়ে নিন।

ধাপ ২০: চুল খোলা রাখতে পারেন, সামান্য টুইস্ট করে। কনের পছন্দের তালিকায় নানা ধরনের খোঁপা বা বানও থাকে।

ফুলের গয়না

হলুদের দিন বেছে নিন ফুলের গয়না
ছবি: কবির হোসেন

বুটিক স্টুডিও উৎসাহ–এর স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার মনামী সানজিয়া হোসেন জানালেন, রেশমি কাপড়ের ফুল দিয়ে হাত, গলা ও কানের গয়না তৈরি করেন তাঁরা। ধাতব উপকরণ কিংবা কাগজের ওপর ত্রিমাত্রিক ফুল বসিয়েও গয়না গড়েন, গোল্ড প্লেটিংয়ের কাজও থাকে। চোকার বা লম্বা সীতাহার যেমন হয়, তেমনি ঝুমকোর আকৃতি কিংবা টিকলিও হয়। হাতে লম্বা কালিরা পরলে অবশ্য গলা আর কানে ছোট গয়নাই পরা হয়। কাগজ দিয়ে কাঠবেলির কুঁড়ি আর কাপড় দিয়ে প্রস্ফুটিত বা আধফোটা বেলি গড়া হয় চুলের জন্য। কয়েক ধরনের বেলি ফুল বানিয়ে তা দিয়ে গাজরাও তৈরি করা হয়। প্লাস্টিকের ওপর ক্রুশ কাটার সুতা জড়িয়ে দেশীয় মোটিফে কুন্দন, চুমকি, পুঁতি লাগিয়ে বালাও গড়েন তাঁরা। হালকা বলে এসব গয়নায় কনে থাকেন স্বাচ্ছন্দ্যে, তা ছাড়া টেকেও বেশি সময়। সংরক্ষণ করলে পরবর্তী সময়ে একাধিকবার পরা যাবে।