শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির (রহ) এর ওপর আরোপিত অভিযোগ ও সেসবের পর্যালোচনা

শায়খ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির (রাহিমাহুল্লাহ) এর রচিত ‘ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ’ শীর্ষক কিতাবের অনেক অংশ নিয়ে আপত্তি উত্থাপন করেন কিছু মহল। এই আর্টিকেলে আমরা সেসব আপত্তি অভিযোগের পর্যালোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

অভিযোগ ১

// পৃষ্ঠা ৪৯ এ দেখুন, মরহুম শায়খ লিখেছেন-

রাষ্ট্রের বিদ্যমানতা ও রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি বা নির্দেশ জিহাদের বৈধতার শর্ত বলে উল্লেখ করে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন:

الإمام_جنة يقاتل من ورائه#

“রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছে ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে।”

(ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ, পৃষ্ঠা ৪৯)
.
#প্রথমত, হাদিসের অর্থ বিকৃত করেছেন-
ইমাম অর্থ রাষ্ট্রপ্রধান কীভাবে হয়? //

উত্তরঃ

না, তিনি হাদিসের অর্থ বিকৃত করেন নি। কারণ ইমাম এর অর্থ যে ‘আহলুস সুন্নাহ এর একত্রিত মতের একজন লীডার’ সে বিষয়ে অনেক বড় আলেম আগেই বলে গেছেন।

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল বলেছেন,

الإمام الذي يجتمع قول أهل السنة والجماعة عليه كلهم يقول هذا الإمام

ইমাম হল সেই ব্যক্তি যার ওপর আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’ এর সকলে একমত হয়েছেন। তারা সবাই বলে, এ আমাদের ইমাম।

এখানে ইমাম আহমাদ, ইমামের অর্থ রাষ্ট্রপ্রধানের চাইতেও বেশি করেছেন। এমন একজনকে তিনি ইমাম বলেছেন, যার ওপর সবাই এগ্রিড থাকবে। বিচ্ছিন্ন কেউ হবে না।

ইমাম ইবন তাইমিয়্যা রাহিমাহুল্লাহ তার মিনহাজুস সুন্নাহ কিতাবে বলেছেন,
الامامة عندهم تثبت بموافقة اهل الشوكة عليها
و لا يصير لرجل إماما حتي يوافقه اهل الشوكة عليها

তাঁদের কাছে (আহলুস সুন্নাহ) ইমামত প্রতিষ্ঠিত হয় আহলুশ শাওকার (ক্ষমতাবান জামা’) একাত্মতা/সত্যায়নের মাধ্যমে। এবং একজন ব্যক্তি ততক্ষণ ইমাম হতে পারে না, যতক্ষণ আহলুশ শাওকা তার ইমামতের ওপর একাত্মতা ঘোষণা করেন না।

এখানেও তিনি বুঝালেন, ইমাম অর্থ সে ব্যক্তি যার কাছে ‘আহলুশ শাওকা’র মাধ্যমে ‘অফিশিয়ালি’ ক্ষমতা এসেছে।
মাস’ঈল ইমাম আহমাদ কিতাবে উল্লেখ হয়েছে, ইমাম আহমাদ তাঁর এক ছাত্রকে প্রশ্ন করেন, ইমাম কে? উত্তরে ছাত্র বলেন,

الذي يجمعون عليه مسلمون كلهم

যার ওপরে সমস্ত মুসলিম ঐক্যমত পোষণ করে।

ইমাম আহমাদ বলেন,

فهذا الامام

অতএব, ইনিই হলেন ইমাম।

কার ওপরে সমগ্র মুসলিম ঐক্যমত পোষণ করে? যদি বিচ্ছিন্ন কারো নেতৃত্বে কেউ কোথাও হামলা করে তাহলে সেটাকে যদি আলেমগণ ‘বৈধ’ জিহাদ না বলে ‘সন্ত্রাস’ বলে, সেক্ষেত্রে কি সেটা ইলমি খেয়ানত হবে? অবশ্যই এটা ডিফেন্সিভ জিহাদের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে না। বলা হচ্ছে অফেন্সিভ জিহাদের কথা। শায়খ জাহাঙ্গির যেই কিতাব লিখেছেন, তা অফেন্সিভ জিহাদের প্রেক্ষাপটেই লিখেছেন। ডিফেন্সিভ জিহাদের ক্ষেত্রে তাঁর সমর্থন ভূমিকাতেই পাওয়া যায়। তিনি ইরাকের যুদ্ধের ক্ষেত্রে ইরাকি যোদ্ধাদের মার্কিন জোটের বিরুদ্ধে ‘ইরাকের প্রতিরোধ যোদ্ধাগণ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এতে বোঝাই যাই, পুরো বইটিই তিনি অফেন্সিভ জিহাদের ক্ষেত্রে লিখেছেন।

এখানে উল্লিখিত হাদিসটি হলো নিম্নরূপ।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِنَّمَا الإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ وَيُتَّقَى بِهِ فَإِنْ أَمَرَ بِتَقْوَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَعَدَلَ كَانَ لَهُ بِذَلِكَ أَجْرٌ وَإِنْ يَأْمُرْ بِغَيْرِهِ كَانَ عَلَيْهِ مِنْهُ ‏”‏

হাদিসটি সহিহ মুসলিম এর ‘কিতাবুল ইমারা’ অধ্যায়ে পাওয়া যায়। এছাড়া শুধুমাত্র إِنَّمَا الإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ এই অংশটি আরো পাওয়া যায় সহিহ বুখারির ‘কিতাবুল জিহাদ’, সুনান আন নাসাই এর ‘কিতাবুল বা’ইয়াত’ ও সুনান আবু দাউদের ‘কিতাবুল জিহাদে’। এছাড়া বিচ্ছিন্ন টেক্সটে আরো কিছু হাদিসের কিতাবেও এই মূলভাবটি পাওয়া যায়।

হাদিসের إِنَّمَا الإِمَامُ جُنَّةٌ يُقَاتَلُ مِنْ وَرَائِهِ এই অংশটি মরহুম শাইখ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির তাঁর ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ বই এ এনেছেন ও অনুবাদ করেছেন এইভাবে – “রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছে ঢাল, যাকে সামনে রেখে যুদ্ধ পরিচালিত হবে।”

সহিহ মুসলিমের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ শারহু সাহিহ মুসলিম এ ইমাম নববি রাহিমাহুল্লাহ উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন,

( الإمام جنة ) أي : كالستر ; لأنه يمنع العدو من أذى المسلمين ، ويمنع الناس بعضهم من بعض ، ويحمي بيضة الإسلام

“(আল-ইমাম) অর্থাৎ: আস্তরের (কাপড়ের কভার) মত। কারণ তিনি (ইমাম) শত্রুদের মুসলিমদের ক্ষতি করা থেকে বাধা দেন, আর মুসলিমরা নিজেরা নিজেদের মাঝে (কলহে) বাধা দেন। এবং ইসলামের কেন্দ্রকে রক্ষা করে।”

এখানে ইমাম নববি রাহিমাহুল্লাহ এই হাদিসে ইমাম বলতে এমন কাউকে বোঝায় বলে বলেছেন, যিনি মুসলিমদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করবেন, মুসলিমদের নিজেদের মাঝে কলহ বিবাদ মেটাবেন আর ইসলামের কেন্দ্রকে রক্ষা করবেন।

তো ইমাম নববি বলছেন হাদিস অনুযায়ী ইমাম মানে এই ধরনের একজন প্রধান যিনি ইসলামের কেন্দ্রকে রক্ষা করার মত ক্ষমতাশীল। তাহলে ইমাম মানে রাষ্ট্রের প্রধান বলা কি কোন দিক থেকে ভুল? অন্তত ‘এই হাদীসে’ ইমাম মানে যদি সেনাপতি হতো, ইমাম নববি কি সেটা উল্লেখ করতেন না? কেন করলেন না?

সহিহ বুখারীর বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফাতহুল বারীতে ইবন হাজার আসকালানি রাহিমাহুল্লাহ উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যার বলছেন,

” إنما الإمام جنة ” بضم الجيم أي سترة ، لأنه يمنع العدو من أذى المسلمين ويكف أذى بعضهم عن بعض ، والمراد بالإمام كل قائم بأمور الناس والله أعلم

“ইমাম হল ঢাল’ এর অর্থ হল সুতরা (ঢেকে রাখার কাপড়)। কারণ তিনি (ইমাম) শত্রুদের মুসলিমদের ক্ষতি করা থেকে বাধা দেন, (মুসলিমগণ) একে অপরের মাঝে (কলহে) বাধা সৃষ্টি করেন, আর ‘ইমাম’ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রত্যেকেই যারা মানুষের ওপর কর্তৃত্বশীল হকুম তামিলকারী। ওয়াল্লাহু আ’লাম।”

ইবন হাজার আসকালানি রাহিমাহুল্লাহ এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলছেন ইমাম হল মানুষের ওপর অর্থাৎ জনগণের ওপর হকুমকারী কর্তৃত্বশীল সকল ব্যক্তি। তাই শায়খ জাহাঙ্গির যদি এর অনুবাদে রাষ্ট্রের প্রধানকে বুঝিয়ে থাকেন, তাহলে এটিকে সর্বোচ্চ ইখতিলাফি ব্যাখ্যা বলা যেতে পারে। খিয়ানত নয়।

অভিযোগ ২

// পৃষ্ঠা ৯ এর মাঝামাঝি শায়খ খন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গির (আল্লাহ্‌ তা’আলা উনাকে মাফ করুন) উল্লেখ করেছেন,
“ইরাকে প্রতিরোধ যোদ্ধা বা শিয়া-সুন্নি সঙ্ঘাতে লিপ্ত বিভিন্ন দল নিরস্ত্র অযোদ্ধা মানুষদের হত্যা করলে তাকে সকলেই সন্ত্রাস বলে গণ্য করেন। কিন্তু মার্কিন বাহিনী ফালুজা এবং অন্যান্য স্থানে অযোদ্ধা নিরস্ত্র মানুষদেরকে হত্যা করলে তাকে সন্ত্রাস বলে কখনোই স্বীকার করা হয় না।“

ইরাকের যুদ্ধ ছিল মার্কিন-ন্যাটো জোট ও তাদের সৃষ্ট পুতুল ইরাকি আর্মির বিরুদ্ধে। এটা কখনোই নিছক ‘শিয়া-সুন্নি সংঘাত’ ছিল না।
ডক্টর খন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর মুসলমানদের রক্তের ব্যাপারে চরম ঔদাসিন্য দেখিয়েছেন। যদি উনার জানার সল্পতা থাকত উনি কেন এটা লিখতে গেলেন?
.
আর যদি জেনেশুনে এভাবে নিহত মুসলমান ও সম্ভ্রমহারা বোনদের গায়ে এমন অপবাদ দিয়ে থাকেন তবে আল্লাহ্‌ তা’আলা যেন উনার ফয়সালা তদানুজায়ী করেন। //

উত্তরঃ

মার্কিন মদদপুষ্ট হলেও যুদ্ধতে শিয়া-সুন্নী পরস্পর যুদ্ধ করেছে এটা সত্য। এবং ঠিক এই কারণেই আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির বলেছেন, যদি শিয়া-সুন্নী মারামারি করে তাহলে সন্ত্রাস, কিন্তু মার্কিন বাহিনী ফাল্লুজা আক্রমণ করলে সেটা কেন সন্ত্রাস হবে না? এতে তিনি মুসলিম রক্তে কোথায় উদাসীনতা দেখালেন জানি না। অভিযোগকারী নিজেও বলেছেন //এটা কখনোই নিছক ‘শিয়া-সুন্নি সংঘাত’ ছিল না//। অর্থাৎ এটা শিয়া সুন্নী যুদ্ধ ছিল ঠিকই, কিন্তু ‘নিছক’ শিয়া সুন্নী যুদ্ধ ছিল না। লেখক ছাড় পেয়ে গেলেন, কিন্তু শায়খ পেলেন না।

এরপর অভিযোগকারী বললেন, // যদি উনার জানার সল্পতা থাকত উনি কেন এটা লিখতে গেলেন? //
সুবহান-আল্লাহ, পৃথিবীর কোন আলিম কবে ‘সবকিছু’ জেনেশুনে কিছু লিখেছিলেন? কোন আলিম? কোন ফকিহ? কোন মুজতাহিদ? এরপর অভিযোগকারী নিজেও স্বীকার করেছেন যে তিনি নিশ্চিত নন যে শায়খ কি না জেনেই এটা লিখেছেন কিনা (যদি ধরে নিই তিনি জানতেন না এটা ন্যাটো পুষ্ট যুদ্ধ)। তিনি লিখেছেন // আর যদি জেনেশুনে এভাবে নিহত মুসলমান ও সম্ভ্রমহারা বোনদের গায়ে এমন অপবাদ দিয়ে থাকেন তবে আল্লাহ্‌ তা’আলা যেন উনার ফয়সালা তদানুজায়ী করেন।//

অর্থাৎ, তিনি নিজেও শায়খের জন্য হুসন আয-যন দিয়েছেন যে তিনি জানেন না।

অভিযোগকারী আরো বলেছেন,

// এত কিছুর পরও উনি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, কোনো মানুষ বা মানবগোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে চিহ্নিত করা খুবই কঠিন। (লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) //

এতকিছুর পরেও কিন্তু শায়খ এটা বলেন নি যে আমেরিকা সন্ত্রাসী না, বা ‘মুজাহিদ’রা সন্ত্রাসী। তিনি শুধু বারবার এটিই দেখিয়েছেন যে, বিশ্বে সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা এখন যার যেমন ইচ্ছা তেমন দিচ্ছে। সেই ৯ পৃষ্ঠাতেই শায়খ লিখেছেন,

“আরো লক্ষণীয় যে, সাধীনতা আন্দোলন ও প্রতিরোধ যুদ্ধকে ‘সন্ত্রাস’ বলে আখ্যায়িত করে স্বৈরাচার, দখলদার বা সাম্রাজ্যবাদীদের চিরাচরিত নিয়ম। নেপালের মাওবাদীদের সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জনগণ তাদেরকেই পছন করেছে। বাংলাদেশের সাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সর্বদা সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। এ জন্য বলা হয়, One man’s terrorist is another man’s freedom fighter”.

এখানেও তিনি উল্লেখ করেছেন যে সন্ত্রাসী ডিফাইন করার কোন ইউনিভার্সাল রূল নেই, যার যেভাবে ইচ্ছা ডিফাইন করছেন। অথচ লেখক ভাই এর বক্তব্য পড়লে মনে হবে তিনি তাবত আমেরিকান কাফেরদের সন্ত্রাসী বলে মনেই করেন না। সেলুকাস।

 

অভিযোগ ৩

// আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির (র) লিখেছেন, মুআবিয়ার (রা) মৃত্যুর পরে কূফাবাসীগণ ইমাম হুসাইনকে (রা) রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বাইয়াত করে পত্র লিখেন। তারা ইমাম হুসাইনকেই বৈধ রাষ্ট্রপতি হিসেবে গ্রহণ করেন এবং ইয়াযিদের রাষ্ট্রক্ষমতার দাবি অস্বীকার করেন। এভাবে মুসলিম সমাজ দুটি রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং যুদ্ধবিগ্রহ সংঘটিত হয়। //

এখানে আমি অভিযোগকারীর সাথে কিছুটা একমত। বাকিটা নই, কারণ কুফাবাসী হুসাইন (রা) কে চিঠিতে লিখেছিল ‘আপনি না আসলে আমরা আর জুম’আ পড়বো না।’ যদিও জুম’আ একটি রাষ্ট্রিয় ইবাদত (যদি ইসলামি রাষ্ট্র হয়)। কেউ তখন জুমা পড়তে অস্বীকার করার অর্থ হল সে শাসককে স্বীকার করে না। এখেত্রে কুফাবাসী সরাসরি ইয়াযিদকে শাসক মানতে অস্বীকার করে আর হুসাইন (রা) কে শাসক মেনে নেবে বলে ওয়াদা করে। তাই টেকনিকালি ইসলামি শাসন তখন দুই ভাবে ভাগ হয়ে যায়। এবং যুদ্ধ শুরু হয়। আর এটা যেহেতু একটি ‘রাষ্ট্রীয় যুদ্ধ’, তাই অনেক সাহাবী এতে অংশ নেন নি, এই কথাও শায়খ তার বই-এ উল্লেখ করেছেন। এই ঘটনা উল্লেখিত হয়েছে রাষ্ট্র ক্ষমতাশীলের নেতৃত্বে যুদ্ধ করার অংশে। এবং ইয়াযিদের নেতৃত্বে যার যুদ্ধ করেছিল তারা রাষ্ট্র প্রধানকে মেনেই যুদ্ধ করেছিল।

যেই স্থানে আমি অভিযোগকারীর সাথে একমত, সেটা হল শায়খ বলেছেন মুসলিম সমাজ ‘দুটি রাষ্ট্রে’ বিভক্ত হয়। এটা আমারো বোধগম্য হয় নি। তিনি এখানে আরো যত্নশীল হতে পারতেন। এই অংশটুকু অবশ্যই ব্যাখ্যার দাবি রাখে এবং সংশয়ের সৃষ্টি করে। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুক।

কিন্তু পুরো কিতাবের এই একটা অংশকে তুলে ধরে তিনি ‘ইলমের খেয়ানত’ করেছেন বলাটা অতিরঞ্জন। কারণ রাষ্ট্রীয় শাসকের নেতৃত্বে কেন জিহাদ করতে হবে তার ব্যখ্যা তিনি আরো বিভিন্নভাবেই পরবর্তী প্যারাগ্রাফগুলোতে দিয়েছেন। শুধু এই একটা ‘ভুল’ উদাহরণেই থেকে থাকেন নি।

অভিযোগ ৪

বইটির ভূমিকায় মরহুম লেখকের (ড. খন্দকার আবদুল্লাহ জাহাঙ্গির) শ্বশুর ফুরফুরা পীর সাহেব লিখেছেন,

“বিড়ালকে অভুক্ত বেঁধে রাখার জন্য কঠিনতম নিন্দা জানিয়েছেন যে মহানবী ﷺ তাঁর উম্মতের কেউ ইসলামের নামে মানুষ খুন করতে পারে একথা কল্পনাও করতে পারি না।”

(ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ, পৃষ্ঠা ৩)

আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন,

“অতঃপর নিষিদ্ধ মাস অতিবাহিত হলে মুশরিকদের হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওৎ পেতে বসে থাক। কিন্তু যদি তারা তওবা করে, নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে, তবে তাদের পথ ছেড়ে দাও। নিশ্চয় আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।“
[সুরা তাওবা: ৫]

“তোমাদের উপর যুদ্ধ ফরয করা হয়েছে, অথচ তা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয়।“ [সুরা বাকারাঃ ২১৬]

উপরোক্ত আয়াত দুটি ছাড়াও কুর’আনের কয়েক’শ আয়াত ও সহস্রাধিক হাদিস দ্বারা প্রমাণিত শুধুমাত্র ইসলামের নামেই মানুষ হত্যা করা জায়েজ বরং ক্ষেত্রবিশেষে তা অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের ফরজ ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত।

উত্তরঃ

সিরিয়াসলি?  এই দুইটা আয়াত দিয়ে যাকে যেখানে ইচ্ছা মেরে ফেলার বৈধতা পাওয়া যায়?

শাইখের শ্বশুর একটি ‘আম’ কথা লিখেছেন যে ‘ইসলামের নামে’ মানুষ হত্যা বৈধ নয়। কথাটা কি এতটুকু মিথ্যা? আমার বাবা নামাজ পড়েনা, তাই আমি তাকে কাফের মনে করি। কাফের হত্যা জায়েজ ইসলামে, আল্লাহ বলেছেন মুশরিকদের যেখানে পাও হত্যা কর। আমি কি আমার আব্বাকে খুন করতে পারবো?

ভেড়ার পানি খাওয়ার গল্পতে ভেড়াকে বাঘ বলছে তুই ঝরনার নিচের অংশ থেকে পানি খাচ্ছিস কেন? ভেড়া বলল আপনি তো আপস্ট্রিমে। আপনার পানি তো আমি নষ্ট করছি না। এরপর বাঘ বলল, ‘তবে তোর বাপ নিশ্চই করেছি’। আরে সেই বলে ঘাড় মটকে দিল। শাইখের শ্বশুরের একটি আম বক্তব্যেকে ‘তোমার জামাই তো এই বই লিখছে’ অযুহাতে এইভাবে উল্লেখ করা কতটা ইলমের খেয়ানত?

 

অভিযোগ ৫

// মরহুম শায়খ পৃষ্ঠা ৯ এর শেষে উল্লেখ করেছেন

“যুদ্ধের ক্ষেত্রেও উভয়পক্ষ প্রতিপক্ষের সৈন্য ও নাগরিকদের মধ্যে ভীতিসঞ্চারে সচেষ্ট থাকে। তবে সন্ত্রাসের সাথে যুদ্ধের মৌলিক পার্থক্য হলো, সাধারণ যুদ্ধ ও গেরিলা যুদ্ধ উভয় ক্ষেত্রেরই যোদ্ধারা মূলত যোদ্ধা বা যুদ্ধবিষয়ক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সচেষ্ট থাকে এবং সামরিক বিজয়ই লক্ষ্য থাকে।

পক্ষান্তরে সন্ত্রাসের ক্ষেত্রের সামরিক বিজয় উদ্দেশ্য থাকে না। এক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্যেই হলো সামরিক-অসামরিক নির্বিচারে সকল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা।”

#বিশ্লেষণ

বরাবরের মতই মরহুম শায়খ পূর্বের লাইনের সাথে পরের লাইনের সামঞ্জস্য দেখাতে পারেন নি। অধমের কাছে বোধগম্য নয়, শায়খ শুরুতে বললেন সন্ত্রাসী/সন্ত্রাস কাদের/কাকে বলা হয় তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।

কিন্তু এই প্যারাতে দেখা যাচ্ছে যে, শায়খ খুজে পেয়েছেন। কিভাবে, কোথা থেকে উল্লেখিত তাও পরিষ্কার করা হয়নি। কিন্তু শায়খ এখানে একটি সংজ্ঞায়ন করেছেন, যদিও এটার কোনো সুত্র উনি উল্লেখ করেন নি। //

উত্তরঃ

এটা অভিযোগকারীর বুঝতে পারার ক্ষমতার সল্পতা। শায়খ বারবার বোঝালেন সন্ত্রাসীর ডেফিনিশান কোন ইউনিক এগ্রিড আপন ডেফিনিশান নয়। যার যার ডেফিনিশানেই সন্ত্রাস আলাদা। শায়খ নিজে যখন সন্ত্রাসী উল্লেখ করেছেন, তিনি অবশ্যই তাদের মীন করেছেন, যাদের নিয়ে এই বই। অবশ্যই এই বই লিখিত হয়েছে জেএমবি ঘরানার মানুষদের জন্য যারা নিরিহ মানুষ হত্যা করেছে, অতিক্রম করেছে শরিয়তের সীমা। এবং এদের সন্ত্রাসী শুধু তিনি নন, বাংলাদেশের তাবত কওমী ওলামাও এদের মুজাহিদ বলেন না। কেউ বললে সেটা বিচ্ছিন্নতা। বাংলার মেইনস্ট্রিম কওমী ওলামা কিরাম কখনই জেএমবিকে মুজাহিদ বলেন নি। তাহলে বাংলার সিংহভাগ আলেমই ইলমের খেয়ানত করছেন গুটিকয়েক ফেসবুকার ছাড়া। দুঃখজনক।

এছাড়া অভিযোগকারী লিখেছেন,

//বনি কুরাইজার বিরুদ্ধে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আচরণ অবশ্যই হাদ্দ কিংবা ক্কিসাস নয়। কেননা তাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তি এবং নারী ছাড়া বাকী সবাই অবশ্যই যুদ্ধে শরিক হয়নি। এবং তাদেরকে যুদ্ধ চলাকালীনও হত্যা করা হয়নি।

শায়খের সংজ্ঞানুযায়ী একে কোনোভাবেই যুদ্ধ বলা যায় না। //

এখানে অত্যন্ত আপ্রাসংগিকভাবেই বনু কুরাইযার কথা নিয়ে আসা হলো। বনু কুরাইযার ঘটনার ঠিক কোন পয়েন্টটা লেখক শায়খের ‘খিয়ানত’ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে নির্দেশ করলেন, তা বোধগম্য নয়।

 

অভিযোগ ৬

// স্ববিরোধী বক্তব্যঃ
শায়খ লিখেছেন, যুদ্ধের ক্ষেত্রেও উভয়পক্ষ প্রতিপক্ষের সৈন্য ও নাগরিকদের মধ্যে ভীতিসঞ্চারে সচেষ্ট থাকে।

আবার নিচে লিখেছেন, পক্ষান্তরে সন্ত্রাসের ক্ষেত্রের সামরিক বিজয় উদ্দেশ্য থাকে না। এক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্যেই হলো সামরিক-অসামরিক নির্বিচারে সকল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা।

সৈন্য ও নাগরিক দ্বারা কী উদ্দেশ্য? স্বাভাবিকভাবেই এটা বুঝে আসে যে, সৈন্য হচ্ছে সামরিক ব্যক্তিত্ব এবং নাগরিক হচ্ছে বেসামরিক ব্যক্তিত্ব। এছাড়াও, শায়খ এখানে “এবং” অব্যয় ব্যবহার করেছেন যা দ্বারা স্পষ্টতই বুঝে আসে যে, যুদ্ধে বেসামরিকদের আক্রমনও করা হয় ভীতিসঞ্চারের উদ্দেশ্যে।

পরবর্তী বক্তব্যের সাথে তাই সংঘর্ষ হচ্ছে। কেননা সন্ত্রাসের উদ্দেশ্যও সামরিক-বেসামরিকদের মাঝে ভীতিসঞ্চার করা।

বাকী থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার বিষয়টি। এমন কোনো ব্যক্তি দুনিয়ার বুকে রয়েছে কি, যে বলবে যুদ্ধের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা নয়?

মূলতঃ এই স্পষ্টতই স্ববিরোধী বক্তব্য থেকে বুঝে আসে যে, মরহুম শায়খ শুধুমাত্র কলম চালিয়েছেন এবং উনার গুনমুগ্ধ ভক্তরা শুধু পড়েই গিয়েছেন। যাচাই-বাছাই কিংবা সত্যানুসন্ধানের মেজাজ লেখক-পাঠক উভয়ের মাঝেই ছিল অনুপস্থিত। //

উত্তরঃ

আবারও অভিযোগকারীর বিশ্লেষণ ক্ষমতার অপরিপক্বতার উপস্থাপন। শায়খ বলেছেন ‘সাধারণ যুদ্ধে’ উভয়পক্ষ প্রতিপক্ষের সৈন্য ও নাগরিকদের মধ্যে ভীতিসঞ্চারে সচেষ্ট থাকে এবং সামরিক বিজয় উদ্দেশ্য থাকে। কিন্তু সন্ত্রাসের ক্ষেত্রের সামরিক বিজয় উদ্দেশ্য থাকে না। এক্ষেত্রে মূল উদ্দেশ্যেই হলো সামরিক-অসামরিক নির্বিচারে সকল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে ভীতি সঞ্চারের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা।

এখানে পরস্পর বিরোধীতা কোথায় পেলেন লেখক তা বুঝতে পারলাম না। শায়খ দাবি করেছেন যুদ্ধ যোদ্ধারাও করে, সন্ত্রাসীরাও করে। কিন্তু যোদ্ধাদের মত সামরিক বিজয় এদের লক্ষ্য থাকে না। এদের লক্ষ্য থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা।

অভিযোগকারী হয়তো দ্বিমত করতে পারেন শাইখের সাথে যে না, সন্ত্রাসীরা সামরিক উদ্দেশ্যও হাসিল করতে চায়। সেক্ষেত্রে সেটা একটা রিফিউটেশান আসতে পারে। তবে সেটা বিস্তারিত ব্যাখ্যা সাপেক্ষে। কারণ অভিযোগকারী যেটাকে সামরিক বিজয় ভাবছেন, সেটা আদৌ সামরিক বিজয় কি না, এই নিয়ে যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, সেটা কি অভিযোগকারী একেবারেই অগ্রাহ্য করলেন? লেখক কি বলতে চাইছেন, তাবত উম্মাহ তার ‘সামরিক বিজয় উদ্দেশ্য’ সংক্রান্ত ব্যাখ্যা মেনে নিতে বাধ্য? যদি তিনি তা মনে না করেন আর অন্য সব বিষয়ের মতই একে মুখতালাফ মনে করেন, তাহলে শায়খের বিরুদ্ধে ‘ইলমের খেয়ানতের’ অপবাদ কেন? আমার ব্যাখ্যার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই কি তা ইলমের খেয়ানত?

 

অভিযোগ ৭ 

// সন্ত্রাসের অসম্পূর্ণ সংজ্ঞাঃ
যে ব্যক্তি টাকার বিনিময়ে খুন করে তাকে কি আমরা সন্ত্রাসী বলি না?

ছিনতাইকারী/চাঁদাবাজদের কে কি সন্ত্রাসী বলা হয় না?

যদি এদের সন্ত্রাসী বলা হয়, তাহলে পাঠকের কাছে প্রশ্ন থাকে – টাকার বিনিময়ে খুন করা কিংবা ছিনতাই করার মাঝে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিভাবে হাসিল হয় !?!

অর্থাৎ, সংজ্ঞাটি অসম্পূর্ণ। বেখেয়াল ব্যক্তি কিংবা শায়খের গুনমুগ্ধ পাঠকমাত্রই বিষয়টি এড়িয়ে যাবেন। //

উত্তরঃ

সন্ত্রাস অনেক রকমের হয়। পারস্পেক্টিভ অনুযায়ী আমরা সন্ত্রাস সংজ্ঞায়িত করি। এই বইটি লেখাই হয়েছে ‘দলগত’ সশস্ত্র যুদ্ধকে বিষয়বস্ত করে। তাই শুরু থেকেই দেখেছি সন্ত্রাসের উদাহরণ আর ব্যখ্যা করতে গিয়ে শাইখ বারবার বিভিন্ন রাষ্ট্রিয় যুদ্ধের উদাহরণ এনেছেন। তাই এই কনটেক্সটে সন্ত্রাসবাদ বলতে আমরা ধরেই নিয়েছি যে দলগত সশস্ত্র যুদ্ধ যা রাষ্ট্রের পরিসীমায় ঘটে। এখানে ছিঁচকা চোরের উদাহরণ এনে ব্যাপারটায় পুরোই পানি ঢেলে দেয়াটা একদমই শিশুতোষ।

 

অভিযোগ ৮ 

// দেখুন, পশ্চিমাদের সন্ত্রাস/সন্ত্রাসীর সংজ্ঞায়ন দ্বারা মরহুম শায়খ প্রভাবিত হয়েছেন কি না? (যদিও, কয়েক লাইন পরেই উনি অবশ্য সরাসরি পশ্চিমা সংজ্ঞা উদ্ধৃতি করে তার স্বপক্ষে বক্তব্য পেশ করেছেন।) //

উত্তরঃ

তিনি শুধুমাত্র পশ্চিমা সংজ্ঞা উল্লেখ করেছেন সন্ত্রাসবাদ ডিফাইন করতে। কিন্তু পুরো কিতাবে তিনি কোন স্থানেই দলিল প্রমাণ দিতে গিয়ে পশ্চিমা কোন কন্সটিটিউশনের আশ্রয় নেন নি। নিয়েছেন কুর’আন সুন্নাহ ও আসারের আশ্রয়। সেসবকে অগ্রাহ্য করে শুধু কাকে কোট করে সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা আলোচনা করেছেন, সেটা নিয়ে পড়ে থাকা তো ভারি দুঃখজনক।

 

অভিযোগ ৯

//শায়খ জাহাঙ্গির এই বইটি দিফাই জিহাদ (ডিফেন্সিভ জিহাদ) নিয়ে লিখেছেন। কারণ তিনি এখানে ৯/১১ জাতীয় হামলাকে উল্লেখ করেছেন। আর ৯/১১ জাতীয় হামলা আমাদের মতে দিফাই জিহাদ। তাই শায়খ জাহাঙ্গির দিফাই জিহাদে ইমাম শর্ত বলেছেন যা সঠিক নয়।//

উত্তরঃ 

কোন ‘আলিমের কোন একটা বক্তব্য যদি আপাত দৃষ্টিতে সহজবোধ্য মনে না হয়, তাহলে তাঁর বক্তব্য বুঝতে হলে তাঁর অন্যান্য লেখা পড়া উচিত। তবেই বিষয়টা স্পষ্ট হবে।

এখানে উল্লেখ করা দরকার ছিল, যে শায়খ আদৌ ৯/১১ জাতিয় হামলাগুলোকে দিফাঈ হামলা মনে করেন কি না। যদি তিনি সেসব হামলাকে জিহাদ তলব মনে করেন, সেক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য স্পষ্ট। জিহাদ তলবে অবশ্যই ইমামের অনুমতি জরুরাত।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে, আমরা কীভাবে বুঝবো তিনি তাঁর কিতাবে এইসব হামলাকে জিহাদ তলব হিসেবে গণ্য করেছেন?

এটা বুঝতে হলে আমাদের তাঁর ফিকহুল আকবারের ব্যাখ্যাগ্রন্থ কিতাবে যেতে হবে। সেখানে ইমামত ও রাষ্ট্র অধ্যায়ে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন দিফাই জিহাদে কোন ইমামের অনুমতির দরকার নেই। এবং তিনি এর সমর্থনে আল-মুকনি’ এর শারহে শায়খ ইবন উসাইমিনের বক্তব্য উল্লেখ করেন।

20767733_10211509078976201_8361681396702124302_n (1)

 

তাই এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলেই প্রতীয়মান হয়, যে তিনি ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ কিতাবে দিফাই জিহাদে ইমামের অনুমতি আছে বলে প্রচার করেছেন।

আল্লাহু আ’লাম।

 

Leave a comment

Create a free website or blog at WordPress.com.

Up ↑